‘সরকারের উপর’ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেওয়া বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এক প্রতিবেদনে জানায়, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের উপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে আমরা মনে করি।”
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে র্যাবসহ এর সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এ প্রসঙ্গ টেনে বুধবার চট্টগ্রামে দলীয় সমাবেশে ফখরুল বলেছিলেন, “শুধু র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিলে হবে না, দিতে হবে শেখ হাসিনা সরকারকে। এ শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।”
ফখরুল এদিন আরও বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে এখানে মানবাধিকার নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৭৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন বের হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে এখানে গুম হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়। বিচার বিভাগও স্বাধীন নয়।“
এর প্রতিক্রিয়ায় শাহরিয়ার বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম, চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য।
“আমি জানি না, কতটুকু সত্য। যদি এটা বলে থাকেন, এটা হবে খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”
জনগণের প্রতি আস্থা না রাখা বিএনপির পুরনো ধারা দাবি করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এটি আবারও বিএনপির বহিঃপ্রকাশ হবে। জনগণের প্রতি আস্থা না রেখে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে ব্যবহার করার চেষ্টা করা অথবা এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে সেসব বিদেশি রাষ্ট্রের মুখ থেকে কিছু বের করা অথবা বর্তমান সরকারের সাথে সেই রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা...।”
২০১১ সালে উইকিলিকসের ফাঁস করা তারবার্তার প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যে দলটির তিনি (মির্জা ফখরুল) প্রতিনিধিত্ব করছেন, সেই দলের যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা ভারমুক্ত চেয়ারম্যান, যাই বলুক না কেন, যিনি দণ্ডিত এবং পলাতক।
“তিনি রাজনীতি করাকালীন সময়ে, প্রধানমন্ত্রীর সন্তান থাকাকালীন সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন তার প্রতি বিধিনিষেধ আরোপ করে, এই রকম তারবার্তা মার্কিন প্রশাসনের কাছে গিয়েছিল। জেমস মরিয়ার্টির (ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত) উইকিলিকসের বার্তার কপি আপনাদের সকলের কাছে আছে।”
তিনি বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তারেক রহমান যে একটি বাধা, সেই দলের মহাসচিব সেই রাষ্ট্রকে (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান না জানিয়ে, আমার মনে হয়, তার প্রথম কাজটি করা উচিত তারেক রহমান যে ভুলত্রুটি করেছে, এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেন মাফ করে দেয়...।
“অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার যে যাতায়াতের একটা বাধা আছে বলে শোনা যায়, সেটি যেন প্রত্যাহার করে দেয়।”