ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্ককে সাধ্যমত যে কোনো ধরনের সহায়তার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুৎ সাবুসোলু’র সঙ্গে বুধবার ফোনালাপে তিনি এ আশ্বাস দেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, আলাপকালে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে মোমেন বলেছেন, “আপনি যদি প্রয়োজন মনে করেন, আমরা নির্মাণ শ্রমিক পাঠাতে পারি। আর আপনার যাই প্রয়োজন- আমাদের জানাবেন এবং আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করব।”
গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত ৩৮ হাজার ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ হাজার। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ হয়ে আছে। দুই দেশ মিলে ঠিক কত মানুষ নিখোঁজ, তা এখনও জানা যায়নি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
বহু পরিবার এখনও তাদের নিখোঁজ স্বজনদের লাশ উদ্ধারের অপেক্ষায় আছে। ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের নির্মাণকাজ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ত্রুটিপূর্ণভাবে ভবন নির্মাণের কারণে ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানিতে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে।
সাবুসোলুর সঙ্গে মোমেনের কথোপকথনকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ব্যাপকতায় আমরা ভীষণ মর্মাহত। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে শোক প্রকাশ করছি এবং আপনি আমাদেরকে আপনার ভাই হিসেবে পাশে পাবেন, আমরা সাধ্যমত সহযোগিতা করব।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফোন করার জন্য এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোকবার্তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পাশাপাশি তুরস্কে ৬০ সদস্যের উদ্ধারকারী ও চিকিৎসক দল এবং তাঁবু পাঠানোর জন্যও ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবুসোলুকে মোমেন জানিয়েছেন, আগের দুই হাজার তাঁবুর ধারাবাহিকতায় তুরস্কের জনগণের জন্য আরও ১০ হাজার তাঁবু পাঠাবে বাংলাদেশ।
ভূমিকম্পের পর তুরস্কের বর্তমান অবস্থা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবুসোলু।
তাকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আপনি টেলিভিশনে যা দেখেছেন- তা ভয়াবহ। কিছু প্রদেশ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৭ দশমিক ৭ এবং ৭ দশমিক ৬ মাত্রার দুইটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে এবং হাজার হাজার পরাঘাত ছিল, যার বেশিরভাগ ছিল ৬ দশমিক ৫ মাত্রার।”
৩৮ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর পর এখনও অনেকে ধ্বংসস্তুপের নিচে পড়ে থাকার কথা তুলে ধরে সাবুসোলু বলেন, “স্বাভাবিক জীবন ফেরানো আর সাময়িক আশ্রয় দেওয়ার জন্য আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি। এবং ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে পুনর্নির্মাণ পরিকল্পনাও করছি আমরা।”
ভূমিকম্পে বাংলাদেশি নাগরিকদের আহত হওয়ার ঘটনাতেও দুঃখপ্রকাশ করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তাকে জানান, ধ্বংসস্তুপ থেকে দুই বাংলাদেশিকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও ২৪ জনকে সরিয়ে আনা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে।