Loading...
The Financial Express

‘ভাষার’ নীতিমালা পরিবর্তনে খেপেছেন ইউটিউবনির্ভর নির্মাতারা

| Updated: January 18, 2023 17:03:56


‘ভাষার’ নীতিমালা পরিবর্তনে খেপেছেন ইউটিউবনির্ভর নির্মাতারা

নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের ‘নিষিদ্ধ ভাষা প্রয়োগ’সংশ্লিষ্ট নীতিমালায় বিভিন্ন পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে ভিডিও জায়ান্ট ইউটিউব।

এই সপ্তাহে প্ল্যাটফর্মের গেইমিং কমিউনিটির তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। এর আগে কিছু সংখ্যক কনটেন্ট নির্মাতা দেখতে পান, তাদের পুরোনো ভিডিও হঠাৎ করেই ডিমনিটাইজড হয়ে গেছে।

ইউটিউবে পোস্ট করা জনপ্রিয় ভিডিওগুলোর বেলায় বিজ্ঞাপন থেকে আসা অর্থ ভিডিও নির্মাতার সঙ্গে ভাগাভাগি করে প্ল্যাটফর্মটি। এই ভাগাভাগি বন্ধ হয়ে যাওয়াকে বলা হয় ডিমনিটাইজড হওয়া। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

নির্মাতার বিভিন্ন কনটেন্ট তুলনামূলক বেশি ‘বিজ্ঞাপনদাতা বান্ধব’ হিসেবে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে নভেম্বরে কোম্পানির চালু করা নতুন এক নিয়মের কারণে এমনটি ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চ।

ইউটিউবের বিজ্ঞাপনদাতা বান্ধব কনটেন্ট নীতিমালায় ওই পরিবর্তন আনায় নিষিদ্ধ ভাষার ব্যবহার ও সহিংসতা সম্পর্কে গোটা প্ল্যাটফর্মের দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে।

ইতিবাচক দিক হলো, এই বিষয়ে কোম্পানিটি পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নেবে, সেটি নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও কনটেন্ট নির্মাতাদের উদ্বেগের বিষয়টি শুনেছে ইউটিউব।

“সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় এই আপডেট সম্পর্কে আমরা অনেক নির্মাতার কাছ থেকে শুনেছি।” --টেকক্রাঞ্চকে বলেন ইউটিউব মুখপাত্র মাইকেল অ্যাসিম্যান।

“এই প্রতিক্রিয়া আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা এই নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনছি। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে শীঘ্রই আমরা কনটেন্ট নির্মাতা কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ করব।”

নভেম্বরে, ইউটিউব নিজেদের ‘সহিংসতা’ সংশ্লিষ্ট সংজ্ঞা বিস্তৃত করে বাস্তব বিশ্বের পাশাপাশি গেইমের মধ্যে ‘কোনো প্রকৃত নামধারী ব্যাক্তিকে নির্দেশ করে বা নৃশংস গণহত্যার মতো মর্মান্তিক অভিজ্ঞতাকেও’ সহিংস কনটেন্ট হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে।

সে সময় কোম্পানিটি বলেছে, প্রচলিত গেইমে থাকা বিভিন্ন ‘রক্তপাতের ভিডিও’তে অনুমোদন দেওয়া যাবে, তবে এতে কেবল ভিডিও’র প্রথম আট সেকেন্ড দেখানো যাবে। ফলে, পুরো গেইমিং খাতই বিভ্রান্তিকর এক পরিস্তিতির মধ্যে পড়ে যায়।

ওই তুলনায় বেশি কঠোর ছিল নিষিদ্ধ ভাষা প্রয়োগ সংশ্লিষ্ট নীতিমালার বিভিন্ন পরিবর্তন। সে সময় ইউটিউব ঘোষণা দেয়, প্ল্যাটফর্মে এখন থেকে ‘হেল’ বা ‘ড্যাম’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। তবে, কঠোরতার ভিত্তিতে বিভিন্ন নিষিদ্ধ শব্দ একত্র না করে সবগুলোকেই এক কাতারে ফেলেছে প্ল্যাটফর্মটি। এর উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, বিষ্ঠা ও যৌনাচারের দুটি প্রচলিত স্ল্যাংকে একই মাত্রার আপত্তিকর শ্রেণিতে ফেলেছে ইউটিউব।

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ভিডিও’র টাইটেল, থাম্বনেইল, প্রথম সাত সেকেন্ডে বা গোটা ভিডিওতে ধারাবাহিকভাবে নিষিদ্ধ ভাষা থাকলে সেগুলো বিজ্ঞাপন থেকে আয় নাও করতে পারে।

ভিডিও’র প্রথম আট সেকেন্ড পর থেকে নিষিদ্ধ ভাষা ব্যবহৃত হলে, সেটি বিজ্ঞাপনী আয়ের জন্য বিবেচিত হতে পারে। তবে, এর কিছু সংখ্যক পরিবর্তন প্ল্যাটফর্মে থাকা বিভিন্ন ভিডিও’র বিশাল এক অংশকে প্রভাবিত করেছে। এর মধ্যে অনেক ভিডিও পরিবর্তন ঘোষণার আগেই বিষয়গুলো মাথায় রেখে ভালভাবে তৈরি হয়েছিল বলে উঠে এসেছে টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে।

কনটেন্ট নির্মাতারা নতুন নীতিমালা লক্ষ্য করেন ডিসেম্বরের শেষে। তারা দেখেন, ইউটিউব তাদের কিছু ভিডিওতে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ভিডিও’র ‘রিচ’ ও বিজ্ঞাপন দেখানোর সুযোগও সীমিত হয়ে গেছে।

ইউটিউবের নীতিমালা পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে ‘আরটিগেইম’ নামের গেইমিং চ্যানেল চালানো কনটেন্ট নির্মাতা ড্যানিয়েল কনড্রেনের এক ভিডিও’র ওপর। এই সপ্তাহে ১০ লাখেরও বেশি ভিউ পেয়েছিল এটি।

এইসব পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় কনড্রেনের ডজনখানেক ভিডিও ‘ডিমনিটাইজ’ হওয়ার পর, তার আপিলও প্রত্যাখ্যান করেছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।

“আমি আসলেই মনে করি, এমন চলতে থাকলে আমার সমগ্র জীবিকাই ঝুঁকির মধ্যে যাবে।” --টুইট করেন কনড্রেন।

“এমনটি ঘটায় আমি খুবই বিরক্ত। মনে হচ্ছে, এর প্রতিকারে কিছুই করতে পারছি না।”

এই নীতিমালার লাগাম টেনে ধরতে ইউটিউব কীভাবে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে, ওই বিষয়ে টেকক্রাঞ্চ কোম্পানিটিকে সম্পূরক প্রশ্ন করলে সেটির জবাব দেয়নি ইউটিউব।

Share if you like

Filter By Topic