গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও নওগাঁ এলাকায় থেকে ৫ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইনসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব বলছে, গ্রেপ্তার এড়াতে এই চক্রটি নারী সদস্যদের ব্যবহার করত পাচারের কাজে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. শাকিবুর রহমান (৩৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৩৭) এবং তাদের সহযোগী রাজিয়া খাতুন (৩৩)।
র্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে বলে এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘চক্রের হোতা’ শাকিব এবং রাজিয়া খাতুনকে গ্রেপ্তার করা হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে। আর সেলিনা খাতুনকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি পাশ্ববর্তী দেশ থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে নদীপথে প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ কেজি করে হেরোইন নিয়ে আসে। মাদক বহনের কৌশল হিসেবে তারা নারী সদস্যদের ব্যবহার করত। তাদের মাদক ব্যবসার চক্রে ১০ থেকে ১২ জন নারী সদস্য রয়েছে।”
এই চক্রটি একেকজন বাহকের মাধ্যমে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং সাভারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম করে হেরোইন পাঠাত এবং পরিবহনের জন্য তাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ দিত বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, মাদকের পরিমাণ বেশি হলে শাকিব নিজের মোটরসাইকেলে করে তা সরবরাহ করত। গ্রেপ্তারের সময়ও তার কাছে তিন কেজির বেশি হেরোইন ছিল।
“সে নিজেই নওগাঁ থেকে মোটরসাইকেল করে হেরোইনের ওই চালান নিয়ে আসে। পরে তার নওগাঁর বাসায় আরও দুই কেজি হেরোইন থাকার থ্য দেয়। তখন সেখানে অভিযান চালিয়ে তার স্ত্রী সেলিনা খাতুনের কাছ থেকে দুই কেজি হেরোইন উদ্ধার করা হয়।”
মঈন বলেন, শাকিব এখন মাদকের কারবার করলেও একসময় চুরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে।
“প্রায় দুই বছর ধরে সে মাদক চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। সীমান্তবর্তী এলাকায় সহযোগীর মাধ্যমে হেরোইন সংগ্রহ করে সে প্রথমে নিজের বাড়িতে রাখে। পরে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে। কখনও কখনও বাস, লঞ্চ এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও সে হেরোইন সরবরাহ করেছে। হেরোইন বিক্রির টাকা সে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করত।”
রাজিয়া প্রায় ১ বছর এই মাদকের কারবারে জড়িত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কলা হয়, তিনি রাজশাহী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হেরোইন সরবরাহ করেছেন। বেশ কয়েকবার শাকিবের সঙ্গেও তার মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে হোরোইন সরবরাহ করেছেন।
বৃহস্পতিবারও তারা গাজীপুর ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে হেরোইন সরবরাহ করার জন্য নওগাঁ থেকে এসে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন বলে খন্দকার আল মঈনের ভাষ্য।