করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠল চারিধার, কিন্তু করিম বেনজেমার মুখে বাঁধনহারা উল্লাস নেই! বহু কাঙ্খিত ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরলেন স্মিত হাসিতে। যখন অনুভূতি জানাতে গেলেন, তখনও করতালির তোড়ে থামতে হলো এক দফা। এরপর বলতে শুরু করলেন বেনজেমা। সেখানে উঠে এলো দুঃস্বপ্ন অতীত, হাল না ছাড়ার মানসিকতার কথাও।খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্যারিসে সোমবার রাতে জমকালো অনুষ্ঠানে এবারের ব্যালন ডি’অর বেনজেমার হাতে তুলে দেন তারই স্বদেশি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান। সবশেষ ফরাসি হিসেবে ১৯৯৮ সালে জিদান এই পুরস্কার জিতেছিলেন; বেনজেমার হাত ধরে দুই যুগ পর ব্যালন ডি’অর ফিরল ফ্রান্সে।
৩৪ বছর বয়সে এসে প্রথম ব্যালন ডি’অর জয়ের অনির্বচনীয় স্বাদ পেলেন বেনজেমা। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বললেন কখনও হাল না ছাড়ার কথা।
“এটা আমাকে আসলেই গর্বিত করেছে, যে পরিশ্রম করেছি, তার স্বীকৃতি এটি। কখনও হাল ছাড়িনি আমি।”
সেক্সটেপ কাণ্ডে সতীর্থকে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগে ফ্রান্স দল থেকে সাড়ে পাঁচ বছর বাইরে ছিলেন বেনজেমা। অনেক টানাপোড়েনের পর দুঃসম্পর্কের বরফ গলেছে, তিনিও ফিরেছেন দিদিয়ে দেশমের বিশ্বকাপ দলে।
“আমার জীবনে দুজন আদর্শ (রোল মডেল) আছেন, জিদান ও রোনালদো। সবসময় আমার মনে স্বপ্নটা ছিল-সবকিছু সম্ভব। কঠিন সময় ছিল, যখন আমি ফ্রান্স দলে ছিলাম না, কিন্তু তখনও কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং কখনও হাল ছাড়িনি এবং ফুটবল খেলাটা উপভোগ করেছি।”
বিজয়ীর মঞ্চে দাঁড়িয়ে পেছন ফিরে তাকালেন বেনজেমা। বললেন, দুঃসময়েও মাথা উঁচু করে চলেছেন তিনি। জানালেন নিজের দুই ‘আইকন’ খেলোয়াড়ের কথাও।
“বয়স আমার কাছে স্রেফ একটা সংখ্যা। অনেকে এখন পড়ন্ত বয়সে খেলে এবং আমার মধ্যে এখনও খুনে মনোভাব আছে। এই ইচ্ছাশক্তিই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে এবং কখনও হাল ছাড়তে দেয়নি। এটা স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখে, এটাই আমার শক্তি। আমি কেবল এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাই।”
চড়াই-উৎরাই পেরুনো সময়ে পাশে থাকাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে দারুণ অবদান রাখা বেনজেমা।
“এখানে আসার যে পথচলা, তা নিয়ে আমি গর্বিত। এটা সহজ ছিল না। আমার ও আমার পরিবারের জন্য কঠিন ছিল। আজ আমি এখানে এবং প্রথমবারের মতো। আমি আসলে, আসলেই খুশি। ধন্যবাদ আমার রিয়াল মাদ্রিদ ও জাতীয় দলের সতীর্থদের।”