Loading...
The Financial Express

৯ শর্তে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু

| Updated: October 27, 2022 14:29:51


৯ শর্তে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু

অগ্নিকাণ্ডে অর্ধশত প্রাণহানির সাড়ে চার মাস পর ‘শর্ত সাপেক্ষেতৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করেছে সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দুই দিন আগে নয়টি শর্তে বিএম ডিপোকে এ কাজ শুরুর অনুমতি দেয়। এরপর বুধবার সকাল থেকে বিশ ফুট দৈর্ঘ্যের দশটি কন্টেইনার ওঠানামার মধ্য দিয়ে কাজ শুরু হয় বলে জানান ডিপোর নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন মায়নুল আহসান।

গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়।

সরকারি হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন সদস্যসহ মোট ৫১ জন ওই ঘটনায় নিহত হন; আহত হন দুই শতাধিক। সেই অগ্নিকাণ্ডে ডিপোতে রপ্তানি ও আমদানি পণ্যবাহী মোট ১৫৬ কন্টেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে সেসময় জানানো হয়েছিল।

এই কন্টেইনার ডিপোর কার্যক্রম দুর্ঘটনার পর বন্ধ রাখা হয়। ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম চালানোর পর গত ২২ অগাস্ট শুধুমাত্র খালি কন্টেইনার সংরক্ষণ ও হ্যান্ডলিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয় ডিপো কর্তৃপক্ষকে। তবে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনা বন্ধ ছিল।

বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বুধবার বলেন, “কিছু শর্তে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমাদের গার্মেন্টস খাতের রপ্তানি পণ্য ব্যবস্থাপনার অনুমতি দিয়েছে। এ অনুমতি তিন মাসের জন্য দেওয়া হয়েছে।“ খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

অগ্নিকাণ্ডের পর বিভিন্ন সংস্থার পরিদর্শনে ওই ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকার বিষয়টি উঠে আসে। বিএম ডিপোর মূল প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের সহযোগী আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্স থেকে এসব রাসায়নিক বিদেশে রপ্তানির জন্য সেখানে রাখা ছিল।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিপোতে থাকা ওই হাইড্রোজেন পার অক্সাইডই ডিপোতে ‘আগুনের উৎস। দুর্ঘটনার জন্য ডিপো মালিক কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। এছাড়া তদারকির দায়িত্বে থাকা দপ্তরগুলোও দায় এড়াতে পারেন না।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ডিপোতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এবং ফায়ার হাইড্রেন্ট ছিল না। ব্যবস্থাপনাতেও ত্রুটি ছিল।

ওই ঘটনার পর এখন ডিপোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সবকিছুর আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েএখন তারা আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছেন।

ডিপোতে আমাদের প্রায়োরিটি সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি। ইতোমধ্যে আমরা অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের সাথে মিলে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজিয়েছি। আমরা সকল শর্ত প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে একটি মডেল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই।”

তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যেসব শর্ত দিয়েছে, তার মধ্যে বন্দরের অনাপত্তি, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমালা বাস্তবায়ন, ডিপো সংশ্লিষ্ট নীতিমালা পালনের কথা বলা হয়েছে।

এসব না মানলে তিন মাস পরে তাদের অনুমতি বাতিল করা হবে বলেও কাস্টমসের চিঠিতে জানিয়ে রাখা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, এখন বিপজ্জনক কোনো পণ্য ডিপোতে রাখা যাবে না। এসব পণ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডিপোতে আলাদা ছাউনি ও জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএম ডিপোর নির্বাহী পরিচালক মায়নুল আহসান বলেন, “এতদিন আমরা খালি কন্টেইনার সংরক্ষণ করছিলাম। একইসাথে ডিপোর উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিসহ নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা এখন নেওয়া হয়েছে।

কন্টেইনার ডিপোগুলোতে মূলত রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ব্যবস্থাপনা হয়। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের কারখানগুলো থেকে পণ্য ডিপোতে আসে এবং সেখানে কন্টেইনার বোঝাই করে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়।

আমদানি পণ্যবাহী কিছূ কন্টেইনারও বন্দর থেকে ডিপোতে এনে খালাস করে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়। এছাড়া খালি কন্টেইনারও এসব ডিপোতে সংরক্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের হিসেব অনুযায়ী চট্টগ্রামে বেসরকারি পর্যায়ে বিশটি কন্টেইনার ডিপো রয়েছে।

Share if you like

Filter By Topic