তীব্র শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় আগামী ২০২৫ সালে রেকর্ড পাঁচ লাখ অভিবাসীকে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের (পিআর) জন্য স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী শন ফ্রেজার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০২৩ সালে কানাডা চার লাখ ৬৫ হাজার নতুন অভিবাসীকে সেদেশে স্থায়ীভাব বসবাসের অনুমতি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের আগের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যা ৪ শতাংশ বেশি। পরের বছর ২০২৪ সালে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ বেশি অর্থাৎ চার লাখ ৮৫ হাজার অভিবাসীকে পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট (পিআর) দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ফ্রেজার বলেন, ‘‘এ বছর আরো অধিক অভিবাসীকে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা ব্যবসায়ীদের তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রমিক খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।”
সংঘাত, যুদ্ধ বা অন্যান্য নৃশংসতা থেকে প্রাণরক্ষা করতে দেশে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি কানাডা দিয়েছে তা পূরণে তাদের নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা সাহায্য করবে বলেও মনে করেন অভিবাসনমন্ত্রী ফ্রেজার।
যদিও কানাডা সরকার এর আগে বলেছিল, তারা সরকারি সহায়তা পায় এমন শরণার্থীদের সংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনবে। যা ২০২৩ সালে ২৩,৫৫০ থেকে ২০২৫ সালে ১৫,২৫০ এ দাঁড়াবে৷
তবে ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুড ক্ষমতা গ্রহণের পর অভিবাসীদের স্বাগত জানানোর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। এ বছর দেশটি চার লাখ ৩১ হাজার অভিবাসীকে স্বাগত জানানোর পরিকল্পনা করেছিল। বর্তমানে দেশটি যে পথে রয়েছে তাতে তারা ওই লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাবে।
গত কয়েক বছরে কানাডা তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসাখাত এবং স্বাস্থ্যখাতের মত জায়গায় দক্ষ শ্রমিকের তীব্র অভাব।
সেখানে অতিসম্প্রতি পাওয়া তথ্যানুযায়ী গত অগাস্ট মাসে দেশটিতে নয় লাখ ৫৮ হাজার ৫০০টি পোস্ট খালি পড়ে ছিল। আর দেশটিতে মোট বেকারের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
ওইসব বেকারদের অধিকাংশই হয় অদক্ষ বা দেশের এমন অঞ্চলে বসবাস করেন যেখানে তাদের কাজের সুযোগ কম। ফলে তারা খালি পড়ে থাকা পদে কাজ করতে পারছেন না।
নতুন লক্ষ্যমাত্রায় ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে কানাডায় অর্থনৈতিক অভিবাসীদের সংখ্যা প্রায় ১৩ শতাংশ বেড়ে যাবে। তুলনামূলকভাবে ছোট আঞ্চলগুলোতে কর্ম সংস্থানের সুযোগ ব্যাপকভাবে বাড়বে। যা প্রধান প্রধান নগর কেন্দ্রের বাইরের প্রদেশ বা অঞ্চলগুলিতে শ্রমিকদের নিয়ে যেতে সাহায্য করবে৷
রয়টার্স জানায়, কানাডায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ অবসরে যাচ্ছেন। এছাড়াও, দেশটির সবচেয়ে দক্ষ কর্মীরা ব্যাপকভাবে দেশ ছাড়ছেন। ফলে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য তীব্র ঝুঁকিতে পড়েছে।
এ অবস্থায় দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে বিদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক আনায় মনযোগ দিয়েছে কানাডা সরকার।
দেশে শ্রমিক বাড়াতে আরো অধিক শরণার্থীদের আশ্রয় ও পুনর্বাসনের যে সিদ্ধান্ত কানাডা সরকার নিয়েছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।