নীতি পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর জেরে ইরানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভের মধ্যে ‘দাঙ্গায়’ জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তেহরানের একটি আদালত।
দেশটির বিচারবিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত মিজান অনলাইনের ওয়েবসাইটে রোববার এ রায়ের খবর এসেছে বলে ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে।
নারীদের জন্য ইরানে যে কঠোর হিজাব আইন রয়েছে, তা না মানার অভিযোগে ২২ বছর বয়সী মাশাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার মৃত্যুর পর সেপ্টেম্বর থেকেই ইরানজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ চলছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রথমদিকে সেই বিক্ষোভ ছিল কঠোর হিজাবআইনের বিরুদ্ধে । পরে তা সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ নেয়।
মিজান অনলাইন বলছে, একটি সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলার ষড়যন্ত্র এবং বেআইনি সমাবেশসহ একাধিক অভিযোগে রোববার মৃত্যুদণ্ডের ওই রায় দেওয়া হয়।
তেহরানের আরেকটি আদালত আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়েবসাইটটি।
তাদের বিরুদ্ধেও জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলার ষড়যন্ত্র, বেআইনি সমাবেশ এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাদের সাজার মেয়াদ ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে, বলেছে মিজান অনলাইন।
টিআরটি ওয়ার্ল্ড লিখেছে, দণ্ডিতরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ পাবেন বলে বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিক্ষোভকে ঘিরে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলোর কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে ইরানের প্রধান বিচারপতি মহসেনি ইজেই-র আহ্বানের কয়েক দিনের মধ্যেই এ রায়গুলো এল।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে শত্রুপক্ষের ‘হাইব্রিড যুদ্ধের’ অংশ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন ইজেই। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েল ‘দাঙ্গাকারীদের উসকে দিয়েছে।’
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে কতজন মারা গেছে সে বিষয়ে ইরান সরকারের তরফ থেকে কোনো সংখ্যা জানানো না হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন আড়াইশর বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর দিচ্ছে।
সেপ্টেম্বরে বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে ১৪ হাজারের মত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কয়েকদিন আগে ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত জাভেদ রেহমান বলেছিলেন।
আটক অনেকের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার মত অভিযোগ আনায় কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় উদ্বেগও প্রকাশ করেছিল।