চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কৃষিকাজে সেচের জন্য প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল প্রয়োজন হবে বলে প্রাক্কলন করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।
কৃষিসেচ মৌসুমে নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহে মঙ্গলবার এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ডিজেলের এই চাহিদা নির্ধারণ করা হয় বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সেখানে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষিখাতে ১১ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ টন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হয়েছে; যা মোট ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
২০২২-২০২৩ সালের কৃষিসেচ মৌসুমে ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ১২৯ টন ডিজেল এবং ৪৫ হাজার ৯৭১ টন লুব অয়েলের চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে।
গত বছরের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি জ্বালানি তেল কেন সেচের জন্য দরকার হবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। তবে ডলার বাঁচাতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেওয়ার পর থেকেই সেচের জন্য ডিজেলের ব্যবহার বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
দেশে যে পরিমাণ জমিতে সেচের প্রয়োজন হয়, তার ৬০ শতাংশের পানি সরবরাহ করা হয় শ্যালো পাম্প দিয়ে। এ কাজে প্রায় ১৪ লাখ শ্যালো পাম্প ব্য্যবহার হয়, যার তিন চতুর্থাংশই ডিজেলে চলে।
ডিজেলের বাফার স্টক, তেল সরবরাহের জন্য ট্যাংক-ওয়াগন বা রেল ওয়াগন নিশ্চিতকরণ, নৌপথের নাব্য সংরক্ষণ, তেল পাচার রোধ ও নৌঘাট সংশ্লিষ্ট রাস্তার সংষ্কার নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত সময়কে কৃষিসেচ মৌসুম হিসাবে বিবেচনা করে সরকার।
বিপিসির হিসাবে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর থেকে প্রতিবছর ৯ লাখ টন থেকে ১০ লাখ টন ডিজেল খরচ হচ্ছে সেচখাতে; যা বছরের মোট জ্বালানির ১৫ থেকে ১৮ শতাংশের মধ্যে থাকছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষিসেচ মৌসুমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষকদের কাছে সঠিক সময়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রয়োজন মত ডিজেল সরবরাহ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে বিপিসির চট্টগ্রাম কার্যালয়ে কন্ট্রোল রূম খোলা হয়েছে। সেচ মৌসুম উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এ খাতে সার্বক্ষণিকভাবে দেড় লাখ টন ডিজেল মজুদ রাখা হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী অংশ নেন ভার্চুয়াল এ সভায়।
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, আরইবির চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান, বিআইডব্লিউটিএ-এর প্রধান প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধানরা সভায় যুক্ত ছিলেন।