তিন কার্যদিবস পর ফের জটিলতা তৈরি হওয়ায় রোববার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সকাল সাড়ে ৯টায় দেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর কথা থাকলেও ডিএসইতে রোববার কেনা-বেচা শুরু হতে বেলা ১১টা বেজে যায়। তবে সিএসইতে নির্ধারিত সময়েই লেনদেন শুরু হয়।
এই জটিলতার কারণ ব্যাখ্যা করে ডিএসইর জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মো. শফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় আজ ৭০টি সিকিউরিটিজের উপর সার্কিট ব্রেকার থাকার কথা নয়, কিন্তু ভুলবশত সবগুলোর উপর সার্কিট ব্রেকার তুলে দেওয়া হয়। সেটা ঠিক করতে লেনদেন দেরিতে শুরু হয়েছে।”
সার্কিট ব্রেকার হল লেনদেনে অংশ নেওয়া কোনো সিকিউরিটিজের দর ওঠানামার সর্বোচ্চ সীমা। কোনো শেয়ারের দর ওই সীমায় পৌঁছালে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়।
ডিএসইর সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, এক দিনে একটি সিকিউরিটিজের দাম আগের দিনের সর্বশেষ দরের চেয়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে ডিভিডেন্ড ঘোষণার দিনে সিকিউরিটিজের ‘প্রাইস লিমিট ওপেন’ থাকে; অর্থাৎ সেদিন দর কমা-বাড়ার সীমা থাকে না। যে কোনো দরে এটি লেনদেন হতে পারে।
রোববার ৭০টি সিকিউরিটিজ ডিভিডেন্ড ঘোষণার তথ্য ডিএসইকে জানিয়েছে, যা ডিএসই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জানাবে। এজন্য এদিন এসব সিকিউরিটিজের কোনো দর সীমা থাকবে না।
সে অনুযায়ী ৭০টি সিকিউরিটিজের সার্কিট ব্রেকার তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও সবগুলো সিকিউরিটিজের দর সীমা তুলে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় লেনদেন শুরু হলে সব শেয়ার, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধির সুযোগ থাকত সীমাহীন। সে কারণে লেনদেন শুরু করেনি ডিএসই।
সকালে ডিএসইর ওয়েবসাইটে লেনেদেন সংক্রান্ত কোনো তথ্য দেখাচ্ছিল না। লেনদেন করতে না পারায় বিনিয়োগকারীরা বসে থেকে সময় পার করছিলেন ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে।
লংকা বাংলা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার সাফ্ফাত রেজা সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘বিনিয়োগকারীরা বসে আছেন। আমরা ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত লেনেদেন শুরু করতে পারিনি।”
বেলা ১১টা বাজার ৫ মিনিট আগে লেনদেন শুরুর সময় জানিয়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে একটি এসএমএস যায় ডিএসইর আইটি বিভাগ থেকে।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর সার্ভারে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল ডিএসইর লেনদেন। ওই ঘটনার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
ডিএসই পুরো প্রযুক্তি ব্যবস্থা (আইটি সিস্টেম) এবং এর সক্ষমতা যাচাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই কমিটিকে। ডিএসইর সার্ভারে কেন বার বার লেনদেনে বিঘ্ন ঘটছে, তা ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।