জেলা পরিষদসহ সব নির্বাচনই ‘ভুয়া’ অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপি কোনো নির্বাচনেই সম্পৃক্ত নয়, যে কারণে এগুলো নিয়ে কথাও বলতে চায় না।খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
সোমবার ঢাকায় নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমরা কোনো নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত নই। এই নির্বাচন (জেলা পরিষদ) নিয়ে আমরা কোনো কথা বলব না। সমস্ত নির্বাচনই ভুয়া।“
‘বিএনপি ঢাকায় ১০ লাখ জমায়েত করলে আওয়ামী লীগ ৩০ লাখ লোক সমাগম করবে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, “আপনারা যদি ব্যাপক লোক সমাগম করতে পারেন, তবে নিশি রাতে ভোট ডাকাতি কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ভোট করতে হয় কেন, আপনাদের যদি এতই জনসমর্থন থাকে।”
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে যানবাহন বন্ধ করার পাশাপাশি হামলা, গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তারপরও গণসমাবেশমুখী কাফেলা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মানুষের স্রোত দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিড়া-মুড়ি নিয়ে দিনরাত হেঁটে কিংবা ভ্যানে-ট্রলারে করে এসে সমাবেশে আসছে।
“সমাবেশের মাঠে-ময়দানে, রাস্তায়, ফুটপাতে, গলিতে ছোট্ট ঘরে গাদাগাদি করে একত্রে এমনকি বাথরুমের পাশে কাটাচ্ছেন হাজারো দেশপ্রেমিক জনতা। এই অভূতপূর্ব দৃশ্য, এদের অবদান, ত্যাগ- বৃথা যাবে না। এই পরিস্থিতি উপলব্ধি করে আপনারা নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। তা না হলে গণঅভ্যুত্থান আসন্ন।”
ময়মনসিংহে সমাবেশে শেষে ফেরার পথে রেল স্টেশনে ‘হামলা’ এবং ‘মিথ্যা মামলা’ দায়েরের ঘটনার নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা।
‘চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যে লোক সমাগম হয়, তার চাইতে জব্বারের বলি খেলায় মানুষ অনেক বেশি হয়’ বলে দুদিন আগে তথ্যমন্ত্রী যে বক্তব্য দেন তা নিয়েও ক্ষোভ ঝারেন রিজভী।
তার ভাষায়, “হাছান মাহমুদ তো না, হাসাও মাহমুদ। এমন উদ্ভট, আলটপকা, অবান্তর কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী! তথ্যমন্ত্রী তো সঠিক তথ্য দেবেন। কিন্তু এমন তথ্য দেন, সেই তথ্যে মানুষের হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যায়।
“জব্বারের বলি খেলা দেখতে জড়ো হওয়া মানুষ আর শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে জড়ো মানুষের মধ্যে যারা পার্থক্য বোঝেন না- এই ধরনের নেতা মন্ত্রীদেরকে বলে হবু চন্দ্র রাজার গবু চন্দ্র মন্ত্রী। পৃথিবীতে সম্ভবত হাছান মাহমুদ সাহেবই একমাত্র তথ্যমন্ত্রী, যিনি সঠিক তথ্যকে টিনের বাক্সে তালা দিয়ে অসত্য তথ্য সম্প্রচার করেন।”
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, “কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্ববাসী পত্র-পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছে জনসভাস্থল ছাড়িয়ে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল সরকার পতনের দাবিতে ঘর ছেড়ে আসা মানুষের ঢল। ১২ তারিখ চট্টগ্রামেও এবং গত পরশু দিন ময়মনসিংহেও।
“কেবল দেখতে পাননি হাছান মাহমুদ। আমরা রাতকানা শুনেছি। এই প্রথম দিনকানা মন্ত্রী দেখলাম।”
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাটিয়ে চলিল। আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলগুলো তাই, আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের কথাবার্তা তাই। বিদায় লগ্নে তাদের যেকোনো সমাবেশে লোক সমাগম এখন সুপার ফ্লপ হওয়াতে বিদ্বেষবশত বিএনপির সমাবেশকে নিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছেন হাছান মাহমুদ।“
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী সপু, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আবদুল বারী ড্যানি ও আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, যুবদলের আলী আকবর চুন্নু, গোলাম মওলা শাহিন, শ্রমিক দলের মঞ্জরুল ইসলাম মঞ্জু।