ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে রোহিঙ্গাদের সরানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দুই হাজার ৯৭০ জনের মধ্যে প্রথম দফায় ৩৫টি পরিবারের ১৮০ জন রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে সেখানকার (তমব্রু) অন্য রোহিঙ্গাদেরও সরানো হবে।”
“প্রথম দফায় স্থানান্তরিত ৩৫ পরিবারের মধ্যে ২৩টি পরিবার আগে থেকে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিবন্ধিত এবং ১২টি পরিবার শূন্যরেখার অনিবন্ধিত বাসিন্দা।”
কমিশনার আরও বলেন, “ট্রানজিট ক্যাম্পে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হবে। আগে থেকে নিবন্ধিতদের স্ব স্ব ক্যাম্পের মাঝির (কমিউনিটি নেতা) মাধ্যমে ফেরত পাঠানো হবে। এ ছাড়া অনিবন্ধিতদের আপাতত ট্রানজিট ক্যাম্পে রেখে সুবিধা বিবেচনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধীরে ধীরে সবাইকেই স্থানান্তর করা হবে।”
গত ১৮ জানুয়ারি তমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের জেরে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশন (আরএসও) এর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে এক রোহিঙ্গা নিহত এবং শিশুসহ দুইজন আহত হয়। পরে সংঘাতের জেরে আগুন লাগানোর ঘটনায় পুড়ে যায় ক্যাম্পটির সবগুলো বসতঘর।
এ ঘটনায় ক্যাম্পটির আতঙ্কিত কিছু অংশ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এবং আরেকটি অংশ সীমান্তের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রুতে আশ্রয় নেয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তুমব্রুতে আশ্রয় নিয়েছিল দুই হাজার ৯৭০ জন রোহিঙ্গা। তাদের দুই-তৃতীয়াংশ উখিয়া-টেকনাফের কোনো না কোনো ক্যাম্পের নিবন্ধিত বাসিন্দা হলেও অন্যরা শূন্যরেখার অনিবন্ধিত বাসিন্দা।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় জানায়,তুমব্রুতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের সরানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর জানান, এসব রোহিঙ্গার মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাবে- তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইনগত ব্যবস্থা নেবে।