দীর্ঘ ২৫ বছরেও পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা।
সন্তু লারমা বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই চুক্তি এমনিতেই আর বাস্তবায়িত হবে না। চুক্তি বর্তমানে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নে সংগ্রাম অনিবার্য, সংগ্রাম হবেই হবে।”
শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহযোগী ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
জেএসএস প্রধান বলেন, “নানা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। পার্বত্য চুক্তি এটা সাধারণ কোনো দলিল নয়। এটি এই এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকারের সনদ। পাহাড়ের অধিকাংশ জুম্ম জনগণের পার্বত্য চুক্তি সম্পর্কে কোনো জ্ঞান নাই। তারা এই বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের আগ্রহও দেখায় না।”
“অথচ এই বিষয়ে প্রত্যেকের জানা দরকার। শুধু চুক্তি নয়, সংবিধানে মানবাধিকার বিষয় সম্পর্কেও জানা প্রয়োজন। পাশাপাশি চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে সব জুম্ম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।”
সন্তু লারমা আরও বলেন, “পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ যে বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা করেছে, আমি দেখেছি যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে, তাদের এই বিষয়ে আরও পড়ালেখা করতে হবে। চুক্তি সম্পর্কে আরও জানা দরকার। পার্বত্য চুক্তি এটা সাধারণ কোনো দলিল নয়। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে পার্বত্য এলাকার জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন হয়েছে। চুক্তির আগেও যে পরিস্থিতি ছিলো এখনও তা বহাল হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনরে সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান বলেন, “ছাত্রদের নিজের অধিকার আদায়ের জন্য অবশ্যই রাজনীতির প্রয়োজন আছে। রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই পড়ালেখা করতে হবে। আমাদের মধ্যে কয়জনে চুক্তি সম্পর্কে জানো? এই বিষয়ে প্রত্যেকের জানা দরকার। শুধু চুক্তি নয়, সংবিধানে মানবাধিকার বিষয়েও জানা দরকার।“
তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রাম করলে হবে না। কলেজে রাজনীতিও করতে হবে। কলেজে অনেক অর্নাসের বিষয় চালু হয়েছে কিন্তু শিক্ষক সংকট হয়েছে। এই বিষয়েও আন্দোলন করতে হবে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব দাবি তুলে ধরতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক জিকো চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুমন মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাবেক সভাপতি শিশির কুমার চাকমা।
আলোচনা সভা শেষে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়।