ঢাকা থেকে ডামুড্যাগামী একটি লঞ্চ শরীয়তপুরে সেতুর সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর ছাদে থাকা পানির ট্যাংক নিচে পড়ে তিন যাত্রীর প্রাণ গেছে।
গোসাইরহাট থানার ওসি মো. আসলাম শিকদার জানান, আড়াইশ যাত্রী নিয়ে ডামুড্যা যাওয়ার পথে স্বর্ণদ্বীপ প্লাস নামে লঞ্চটি রোববার ভোর ৪টার দিকে জয়ন্তি নদীতে সাইক্ষ্যা ব্রিজে এ দুর্ঘটনায় পড়ে।
নিহতরা হলেন- জামালপুর জেলার রগুনাথপুর দিঘলি সোনাটিয়া গ্রামের বোরহান আলীর ছেলে সাগর আলী (২৩), টাঙ্গাইল জেলার দাইনাবঘির গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ (২৫) ও গোসাইরহাটের কোদালপর সরদার পাড়া এলাকার শাহ আলী মোল্লার ছেলে তানজিল (২৩)। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এ ঘটনায় আরও অন্তত চারজন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হীরা নামের একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। লঞ্চটিকে সরিয়ে ৬ কিলোমিটার দূরে গোসাইরহাট পট্টি লঞ্চঘাটে নিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানান ওসি।
লঞ্চের যাত্রীরা জানান, স্বর্ণদ্বীপ প্লাস ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসে শনিবার রাত ১০টার দিকে। গোসাইরহাটের কুচাইপট্টি এলাকার পার হওয়ার সময় সাইক্ষ্যা ব্রিজের সঙ্গে লঞ্চটি ধাক্কা খায়।
এ সময় প্রচণ্ড ঝাঁকুনি খায় লঞ্চটি। তাতে লঞ্চের তৃতীয় তলায় থাকা পানির ট্যাংক ফেটে নিচে যাত্রীদের উপরে পড়লে ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়ার পর সেখানে আরও একজন মারা যান।
গোসাইরহাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওবায়েদুল হক বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি লঞ্চে থাকা পানির ট্যাংক ফেটে নিচে পড়ে রয়েছে। ট্যাকের নিচে চাপা পড়া কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়, এর মধ্যে তিনজন মারা গেছে। একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
আবুল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, “ভোরে আমি নামাজ পড়তে উঠেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ হয় আর লঞ্চ কোথাও ধাক্কা খায়। দৌড়ে গিয়ে দেখি ব্রিজের সঙ্গে লঞ্চের ধাক্কা লেগেছে। পরে লঞ্চ তীরে ভিড়লে উপরে ওঠে দেখি, পানির ট্যাংক নিচে পড়ে আছে।”
এ দুর্ঘটনার জন্য ‘চালকের গাফিলতিকে’ দায়ী করলেন আমির হোসেন মিয়া নামের এক যাত্রী।
সোবাহান নামের আরেক যাত্রী বলেন, “সাইক্ষ্যা ব্রিজের যে দিক দিয়ে আসার কথা ছিল সেখান দিয়ে না গিয়ে ব্রিজের কাছ দিয়ে যাওয়া কারণে এরকম হয়েছে।”
স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চের মাস্টার মো. নুরুজ্জামান ও লস্কর মো. ইমরান হোসেনকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানিয়েছেন গোসাইরহাট থানার ওসি।