ফেইসবুকে এক পোস্টে বিছানায় রক্তের ছোপের ছবি দিয়েছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি, ১২ ঘণ্টা পর আরেক পোস্টে স্বামী চিত্রনায়ক শরিফুল রাজের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন তিনি।
আগের পোস্টে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা জানিয়েছিলেন পরীমনি; তবে পরবর্তী পোস্টে প্রায় ১ হাজার শব্দে নানা বক্তব্য তুলে ধরে জানালেন, আপাতত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন না তিনি। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
গত কয়েকদিন ধরেই পরীমনি অভিযোগ এবং বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিলেও এনিয়ে পুরোপুরি চুপ রয়েছেন শরিফুল রাজ।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনি এ বছর সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর শরিফুল রাজের সঙ্গে তার বিয়ের খবরও জানান। গত অগাস্টে এই তারকা দম্পতির সন্তান রাজ্যের জন্ম হয়।
তবে গত কয়েক মাস ধরে তাদের দাম্পত্যে টানাপড়েন চলছিল। কিছুদিন আগে পরীমনিই ফেইসবুক পোস্টে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের সঙ্গে রাজকে জড়িয়ে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন।
এরপর গত ৩ ডিসেম্বর একসঙ্গে চট্টগ্রামে স্টার সিনেপ্লেক্সের একটি শাখা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন পরী আর রাজ। তবে ২০ ডিসেম্বর পরীমনি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে সন্তানকে নিয়ে একাই হাজির হন।
গত শুক্রবার এক পোস্টে পরীমনি বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিয়ে লেখেন- “আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে।”
একদিন বাদে শনিবার রাতে আরেক পোস্টে বিছানায় রক্তের ছোপসহ ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, সংবাদ সম্মেলনে আসছেন তিনি।
তবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের খবর জানিয়ে বিকালে নতুন পোস্ট দেন পরীমনি, সেখানেই আনেন নির্যাতনের অভিযোগ।
পরীমনি লিখেছেন- “একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে, বাচ্চা নেয়ার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনোই।
“আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা তখনই আমাকে পেয়ে বসা হলো। যেন, শত কোটি বার যা ইচ্ছে তাই করলেও সব শেষে ওই যে আমি মানিয়ে নেই, এটা রীতিমতো দারুণ এক সাংসারিক সুত্র হয়ে দাঁড়ালো। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের এই সম্পর্ক এত দিন আমার এফোর্টে টিকে ছিলো শুধু।”
তবে এখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে দাবি করে পরীমনি লিখেছেন- “কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলা পর্যায়ে পৌছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকে না। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়।”
সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে থাকার চেষ্টা করেছিলেন দাবি করে এই চিত্রনায়িকা বলেন, “রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বার বার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্যে পরে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে! না । একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গল এর জন্যেই আলাদা হয়ে গেলাম।”
এখন সংবাদ সম্মেলনে না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে পরীমনি লিখেছেন, “রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তন’ই না, আমার ছেলের বাবাও। তাই রাজ্যের বাবার সম্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না আমি।
“সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মী যারা রয়েছেন, আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন। শারীরিকভাবেও আমি বিধ্বস্ত।”
তবে পরীমনি হুঁশিয়ার করেছেন, তিনি কোনোভাবে আক্রান্ত হলে কঠোর পথে যাবেন।
“আমার উপর তার আর তার পরিবারের কোন অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।”