লেনদেন ভারসাম্যে ৫ মাসে ঘাটতি ৫৬৭ কোটি ডলার


বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম | Published: January 04, 2023 09:04:55 | Updated: January 04, 2023 21:01:00


লেনদেন ভারসাম্যে ৫ মাসে ঘাটতি ৫৬৭ কোটি ডলার

আমদানি ব্যয় বাড়লেও রপ্তানি আয়ের উল্লম্ফনে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে ঘাটতি বাড়ার গতি কিছুটা কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের লেনদেন ভারসাম্যের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৬৭ কোটি ডলার।

আগের অর্থ বছরের (২০২১-২২) একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৬২২ কোটি ডলার। তার মানে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি কমেছে ৫৫ কোটি ডলার বা ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

এর আগে গত অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ঘাটতি ছিল ৪৫০ কোটি ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরে একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৩৮৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

সাধারণভাবে কোনো দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝা যায় চলতি হিসাবের মাধ্যমে। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।

রেকর্ড ৩৩২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি এবং চলতি হিসাব ভারসাম্যে ১ হাজার ৮৬৯ কোটি ডলারের ঘাটতি নিয়ে শুরু করা নতুন অর্থবছরে আমদানি নিয়ন্ত্রণে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ ছিল শুরু থেকেই।

ডলার সংকটের মধ্যে কড়াকড়ির কারণে আমদানি কিছুটা কমলেও অর্থ বছরের প্রথম দুই মাসেও তা বেশি ছিল। এতে জুলাই-অগাস্ট শেষে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল সাড়ে চারশ কোটি ডলারের মতো, সেপ্টেম্বরে ঘাটতি ছিল ৭৫৪ কোটি ডলার। অক্টোবরে ৯৫৯ কোটি ডলারের ঘাটতির পর নভেম্বরে অঙ্কটি আরও বেড়ে ১ হাজার ১৭৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় গত জুলাইয়ে নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ যেখানে ৮০০ কোটি ডলারের উপরে ছিল, তা গত ডিসেম্বরে ৩০০ কোটি ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। কমেছে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণও।

এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণ গত ডিসেম্বর শেষে ৫০০ কোটি ডলারের সামান্য বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক, যেখানে গত জুলাই মাসে তা ছিল সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

আমদানি পর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রার খরচে নতুন এলসির বেলায় কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও আগের এলসি ও দায় পরিশোধে তেমন অগ্রতি হচ্ছে না।

আমদানি- রপ্তানিতে সৃষ্ট বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখে প্রবাসীদের পাঠানো বিদেশি মুদ্রা।

চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে ১ হাজার ৪৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের থেকে তা ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ (২৫ কোটি ৩২ লাখ ডলার) বেশি। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিটেন্স এসেছিল ১ হাজার ২৪ কোটি ডলার।

ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও চাপে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত ২৯ ডিসেম্বর শেষে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার।

চলতি হিসাবের ঘাটতিতে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে নিয়মিত ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে।

Share if you like