র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলতে তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার কথা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকেও এ প্রসঙ্গ তোলা হবে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের আয়োজিত এক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন মোমেন।
ডনাল্ড লু ভারত সফর করে শনিবারই বাংলাদেশে আসছেন, খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবসহ এই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে সাত কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন।
এরপর বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া মেলেনি।
লুর সফর নিয়ে প্রশ্নে মোমেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
“আমাদের একটা অনুরোধ থাকবে তাদের প্রতি যে তাদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ।”
র্যাব গঠনের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সম্পৃক্ততার কথা তুলে তিনি বলেন, “র্যাব যখন তৈরি হয়, তখন আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যের পরামর্শেই তৈরি হয়। তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওই দেশগুলো র্যাবের কনসেপ্টটা দেয়। তারাই তৎকালীন সরকারকে এজন্য ইকুয়েপমেন্ট দেয়। তাদের কারণেই প্রাথমিকভাবে র্যাব চালু হয়।
“সময়ের সাথে সাথে র্যাব এখন অনেক পরিপক্ব। দেশের জনগণ তাদের পারফরম্যান্সের জন্য তাদের চায়৷ আমেরিকা অন্য বুদ্ধিতে তাদের উপর প্রেশার দিয়েছে।”
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের যে প্রতিক্রিয়া, তা নিয়ে সরকারে অস্বস্তি আছে কি না কিংবা সে বিষয়টি লুর কাছে তোলা হবে কি না, সেই প্রশ্ন মোমেনকে করেন এক সাংবাদিক।
জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের কোনো অস্বস্তি নেই৷ অন্যরা যদি পরামর্শ দেয়, তা যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে তা আমরা গ্রহণ করব।
“আর পরামর্শ দিলেই তো হবে না, বাস্তবায়নও একটা বড় বিষয়। আমরা বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেব।”
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সবসময় একটা স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায়। কোনো বুলেটের মাধ্যমে আসে নাই, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যালটের মাধ্যমে আসে।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের মৌলিক উদ্দেশ্য, আমরা একটি স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।”
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ এবং জাপান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘জাপানোলজি ইন নিউ এরা’ শীর্ষক দু'দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক হাইব্রিড সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি ও জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাহাবুদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
জাপান ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিদেকি হারা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমান ও জাপানের কোবে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কিচি ওগাওয়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাত ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিভাগের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ-আল-মামুন স্বাগত বক্তব্য দেন।