করোনাভাইরাস মহামারীর মাঝ পর্যায়ে মানুষ যখন সংক্রমণ এড়াতে ঘরবন্দি, তখন ইউরোপে জন্মহার ১৪ শতাংশ কমার তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
হিউম্যান প্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ইউরোপে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে আগের বছরের তুলনায় জন্মহার অনেক কম দেখা যাচ্ছে।
কোভিড সংক্রমণ এড়াতে নয় থেকে ১০ মাসের মত দীর্ঘ লকডাউন পেরিয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসটি এসেছিল।
ওই গবেষণার বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, যেসব দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সঙ্কটাপূর্ণ ছিল, সেখানে জন্মহারের এই পতন আরও বেশি।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথম সংক্রমণ শুরু হলে পরে তা ইউরোপের দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণ রোধে ২০২০ সালে নয় থেকে ১০ মাস দীর্ঘ লকডাউনে যায় ইউরোপের অনেক দেশ।
পরের বছরের জানুয়ারিতে দেখা যায়, লিথুয়ানিয়া ও রোমানিয়ায় জন্মহার কমেছে ২৮ ও ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে সুইডেনে জন্মহার ছিল স্বাভাবিক, সংক্রমণ রোধে সেসময় লকডাউন ছিল না দেশটিতে।
গবেষকরা বলছেন, জন্মহার কমে যাওয়ার এই চিত্র ‘জনসংখ্যার উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে; বিশেষত পশ্চিম ইউরোপে, যেখানে বয়স্ক জনসংখ্যা রয়েছে।
লসান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মিডওয়াইফ সোনোগ্রাফার গবেষক ডাক্তার লিও পোমার বলেন, লকডাউন যত দীর্ঘ হয়েছে গর্ভধারণও ততটা কমেছে। এমনকি মহামারীতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়নি এমন দেশেও এটি ঘটেছে।
“আমরা মনে করি, কোভিড-১৯ এর প্রথম ঢেউয়ে দম্পতিরা স্বাস্থ্য ও সামাজিক সঙ্কট নিয়ে ভয়ে ছিল; যে কারণে নয় মাস পর জন্মহার কমে গেছে।”
গবেষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব, ভাইরাস সম্পর্কে ভীতি এবং সামাজিক ও আর্থিক সঙ্কট সম্ভবত দম্পতিদের সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তে পরোক্ষ কারণ হিসাবে কাজ করেছে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে আগের দুই বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ জন্মহার কমেছে। স্কটল্যান্ড ও ফ্রান্সে ১৪ শতাংশ এবং স্পেনে ২৩ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে ২০২১ সালের মার্চে জন্মহার মহামারীর আগের অবস্থায় ফিরেছিল। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, জন্মহারের এই প্রত্যাবর্তন দুই মাসের আগের ক্ষতিপূরণ হিসাবে এসেছে বলে মনে হয় না।