শিক্ষার্থীদের রাত জেগে ইন্টারনেটের ব্যবহার থামাতে রাত ১২টার পর থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা উচিত বলে মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক।
জাতিকে মেধাশূন্য হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতেই তার এ পরামর্শ। তবে যারা বিদেশের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
একই সঙ্গে প্রযুক্তির মাধ্যমে চলা ‘মিথ্যাচার ও অপপ্রচার’ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে দেশে সুস্থ রাজনীতি বা সুস্থ জীবনযাপন করা খুব কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “লেখাপড়া রেখে আমরা যেভাবে মোবাইলে মনোনিবেশ করি, এটা জাতির জন্য এলার্মিং। আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে জাতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। সরকারের কাছে একটা সুপারিশ থাকতে পারে, রাত ১২টার পরে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা উচিত। যারা বিদেশের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য করে তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে পারে।”
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গবেষণা না থাকলে ভবিষ্যতে মেধার সংকট দেখা দেবে। এমনিতে বর্তমানে টেকনোলজি, বিশেষ করে মোবাইলের কারণে আমাদের সন্তানেরা এখন রাত ১২টা, ১টা, ২টা পর্যন্ত এগুলো নিয়েই থাকে। আমাদের সময় আমরা যেভাবে লাইব্রেরিতে যেতাম, লেখাপড়ার যে উদ্যোগ ছিল, এখন সেগুলো নাই।
“নিশ্চয়ই কানেক্টিভিটি বা টেকনোলজি প্রয়োজন কিন্তু সব কিছুরই একটা মাত্রা থাকা দরকার।...এই সমস্ত যন্ত্রের মাধ্যমে কীভাবে মিথ্যাচার, অপপ্রচার চলে। এগুলো যদি নিয়ন্ত্রণ না থাকে, এদেশে সুস্থ রাজনীতি বা সুস্থ জীবনযাপন করা খুব কঠিন হয়ে যাবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মোজাম্মেল বলেন, আমরা এখানে অনেকে সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। তাদের যদি একাট পার্ট টাইম কাজের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সমস্যা হবে না।
“পৃথিবীর প্রায় সব দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই পার্টটাইম জবের সুযোগ অছে। এটা আমাদের দেশেও সম্ভব।“
অনুষ্ঠানে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বাদল, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সংগঠনের সাবেক সভাপতি মঞ্জুর এলাহী, সাবেক মহাসচিব ড. মোহাম্মদ ফারাস উদ্দীন, বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি শায়েখ সিরাজ ও সাবেক মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার বক্তব্য দেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব মোল্লা মোহাম্মাদ আবু কাওছার।