যুদ্ধাপরাধ: জামায়াতের বিচারে আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায়


FE Team | Published: October 27, 2022 21:27:17 | Updated: October 28, 2022 16:52:28


যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতারা

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের জন্য দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচারে আইন সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদের পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

জামায়াত সংশ্লিষ্টদের নতুন দল গড়ে ইসির নিবন্ধন চাওয়ার মধ্যে বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এই তথ্য জানান তিনি। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

আইনমন্ত্রী বলেন, “এই জামায়াতের বিচার করার জন্য আইনের পরিবর্তন দরকার হবে, সেটা আমি আগেই বলেছি। সেই আইনের যে পরিবর্তন-সংশোধন, সেটা মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হয়েছে। আমরা কিছু দিনের মধ্যেই এই আইনটা পাস করব, তারপর বিচার কার্যক্রম শুরু করব।”

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে ১৯৭৩ সালে প্রণীত আইনের অধীনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৩ সালে আইনে সংশোধনী এনে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষেরও আপিলের সমান সুযোগ তৈরি করা হয়।

এখন আবার আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন পেলে সংসদে যাবে; সেখানে পাস হলেই তা কার্যকর হবে।

ট্রাইব্যুনালে বিচারে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা। তার মধ্যে রয়েছে দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ, নায়েবে আমির আব্দুস সোবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা, মো. কামরুজ্জামান, শূরা সদস্য মীর কাসেম আলী।

একাত্তরে জামায়াতের আমিরের দায়িত্বে থাকা গোলাম আযম, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। গোলাম আযম কারাগারেই মারা গেছেন। সাঈদীকে আমৃত্যু কারাভোগ করতে হবে।

ব্যক্তির অপরাধের বিচার হলেও দল হিসেবে জামায়াতের বিচারের দাবি গণজাগরণ মঞ্চ থেকে উঠেছিল। গোলাম আযমের মামলার রায়ে আদালত জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল দল’ আখ্যায়িত করার পর দাবিটি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতের গঠনতন্ত্র দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে ২০১৩ সালে আদালত রায় দেওয়ার পর তাদের নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। ফলে দলীয় প্রতীকে দলটি ভোটে অংশ নিতে পারছে না।

এর মধ্যেই জামায়াতে ইসলামী থেকে বেরিয়ে আসা দুটি গোষ্ঠী এবি পার্টি ও বিডিপি নামে নতুন দুটি দল গড়ে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন জমা দিয়েছে।

আইনমন্ত্রীকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- দেখা যাচ্ছে জামায়াত ভিন্ন নামে রাজনৈতিক দল গঠন করছে, জামায়াতের বিচারে সরকারের আন্তরিকতার অভাব আছে কি না?

জবাবে আনিসুল হক বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধী এবং ‍যুদ্ধবিরোধী অপরাধী যারা ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপরাধী, তাদের বিচার করতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই বিচার করে দেখিয়েছে যে, এই বিচার আওয়ামী লীগ সরকার করে এবং আপনারা দেখেছেন অনেক রায় কার্যকর হয়েছে।

“এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, অন্য নাম নিয়ে…. এটা আজকে যদি আমি বলি.. আজকেও আমি খবরের কাগজে দেখেছি, এবং এই নিবন্ধনের জন্য তারা নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। আমি দেখতে চাই যে নির্বাচন কমিশন এটা কীভাবে হ্যান্ডল করে, তারপরে এটার ব্যাপারে আমি বক্তব্য দেব।”

হাই কোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন ২০১৩ সালেই করেছিল জামায়াত, যা এখনও বিচারাধীন।

এ মামলাটি শুনানির জন্য রাষ্ট্র উদ্যোগ নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, “প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই নেবে।”

Share if you like