রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিউ স্টার্ট চুক্তিতে রাশিয়া তাদের অংশগ্রহণ স্থগিত করছে।
দুই পক্ষের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রাগার সীমিত রাখতে করা হয়েছিল এ চু্ক্তি। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সর্বশেষ কেবল এই চুক্তিটিই কার্যকর ছিল।
পুতিন অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি চুক্তিটি থেকে সরে যাচ্ছেন না। কিন্তু চুক্তিটি আপাতত স্থগিত হয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যকার অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের সর্বশেষ স্তম্ভ বিপন্ন হয়ে পড়বে।
বিশ্বের পারমাণবিক ওয়ারহেডের প্রায় ৯০ শতাংশই আছে এই দুই দেশের হাতে- যা পৃথিবীকে বহুবার ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যথেস্ট। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ইউক্রেইন যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হতে আর মাত্র দুইদিন বাকি। তার আগে মঙ্গলবার রুশ পার্লামেন্টে বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ন্যাশন’ ভাষণ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন।
সেখানেই বক্তৃতা শেষে আইনপ্রণেতাদেরকে তিনি বলেন, “আমি আজ এই ঘোষণা দিতে বাধ্য হচ্ছি যে, রাশিয়া স্ট্র্যাটেজিক অফেনসিভ আর্মস ট্রিটিতে অংশগ্রহণ স্থগিত করছে।”
যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালালে রাশিয়ারও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়া দরকার উল্লেখ করে পুতিন বলেন, প্রয়োজন পড়লে রুশ আনবিক সংস্থা রোসাটমকেও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য দেশের প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, “অবশ্যই, আমরাই প্রথমে এমন পরীক্ষা চালাব না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যদি পরীক্ষা চালায় তাহলে আমরাও চালাব। কাউকেই এই বিপজ্জনক বিভ্রমের মধ্যে থাকতে হবে না যে, বৈশ্বিক কৌশলগত সমতা ধ্বংস হতে পারে।”
‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তিটি ২০১০ সালে প্রাগে সই হয়েছিল। এই চুক্তিটি পরের বছর কার্যকর হয়। পাশাপাশি ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর আরও পাঁচ বছরের জন্য এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
এই চুক্তিই এতদিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া কী পরিমাণ কৌশলগত পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েন করতে পারে তার নির্ধারক ছিল এবং একইসঙ্গে স্থল-ভিত্তিক, সাবমেরিন-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু বিমানের ব্যবহারের সীমা টেনে দিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডার রয়েছে। তাদের প্রায় ৬,০০০ ওয়ারহেড আছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া নিউ স্টার্ট চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিতের যে পদক্ষেপ নিয়েছে তার মানে হচ্ছে, এখন এই চুক্তি মেনে চলার বিষয়টি যাচাই করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে।