Loading...
The Financial Express

যতদিন প্রয়োজন ততদিন খোলাবাজারে বিক্রি: খাদ্যমন্ত্রী

| Updated: September 07, 2022 15:45:39


এফই  ফাইল ছবি এফই ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে যতদিন প্রয়োজন ততদিন খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। 

পাশাপাশি চলতি আমন মৌসুমে খরা কাটিয়ে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে আরও চাল আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

মন্ত্রী বলেন, “খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বছরে ৫ মাস (মার্চ থেকে এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর) চলে। যদি বাড়াতে হয় সেটা মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত। ওএমএস কর্মসূচি বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য যতদিন প্রয়োজন ততদিন রাখবো।“ 

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বোরো সংগ্রহ অভিযান ও চলমান খাদ্যবান্ধব এবং ওএমএস কর্মসূচিসহ সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে আগের তুলনায় দ্বিগুণ যোগান নিয়ে সারা দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি শুরু করেছে সরকার। 

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওএমসের ডিলার ও ট্রাক থেকে যে কেউ দিনে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ৩০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারবেন। ১৮ টাকা দরে কেনা যাবে ২ কেজি করে আটা। 

প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২২ দিন ওএমএসের ট্রাক বা দোকানে চাল বিক্রি করা হবে। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে ১৯৬০টি কেন্দ্র থেকে; আটা বিতরণ করা হবে ৪০৩টি কেন্দ্র থেকে। 

নিত্যপণ্যের চড়া দামে মানুষের ‘কষ্ট’ সরকার জানে মন্তব্য করে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, “সরকার কাজ করছে। আমাদের সর্বত্র মনিটরিং আছে। জেলা প্রশাসন, খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও মনিটরিং করছেন।" 

সংবাদ সম্মেলনে ধান-চাল সংগ্রহের তথ্য এবং সরকারের আগামী পরিকল্পনা তুলে ধরেন খাদ্যমন্ত্রী। 

তিনি জানান, বোরো মৌসুমে ১১ লাখ ২১ হাজার ৯১০ টন সিদ্ধ চাল এবং ৫৫ হাজার ২০৮ টন আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে। 

“খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যতটুকু বেশি পারি আমরা চাল কিনেছি।” 

তবে ধান কেনায় সরকার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৬ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকলেও কেনা হয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ২৪৮ টন।  

“ধানটা রাখা হয় এজন্য যে, বাজারে যদি ধানের দাম কমে যায়, কৃষকরা যেন বিপদে না পড়ে। সরকার যদি ধানের বাজারে থাকে, তাহলে সিন্ডিকেট করে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনতে পারবে না। তবে আমাদের রেটের চেয়েও কৃষকরা বাজারে বেশি দাম পেয়েছে। এজন্য ধানটা আমরা শতভাগ কিনতে পারিনি।" 

সরকার চলতি আমন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে তবেই চাল আমদানি করবে বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারিভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ ৩০ হাজার টন চাল ও গম কেনা হচ্ছে। 

এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল, মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল এবং ভারত থেকে এক লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম কেনা হবে। 

ভিয়েতনাম, ভারত ও রাশিয়া থেকে চাল আমদানিতে ইতোমধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন এবং চুক্তিও সেরে নেওয়া হয়েছে জানান খাদ্যমন্ত্রী। 

“আজ-কালের মধ্যে হয়তো এলসিও হয়ে যাবে। তবে মিয়ানমার থেকে ২ লাখ টন চাল আনার প্রস্তাব বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাচ্ছে।" 

ভিয়েতনাম থেকে আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি টন সিদ্ধ চাল ৫২১ ডলার ও আতপ চাল ৪৯৪ ডলার করে পড়বে। প্রতি টন চাল ভারত থেকে ৪৪৩ দশমিক ৫ ডলার ব্যয়ে আনা হবে। 

সরকার ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডের চাল বেশি দামে কিনছে বেন- সেই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "আমরা থাইল্যান্ডের কাছে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। তারা সেভাবে সাড়া দেয়নি। আগে চুক্তির পরও চাল নেওয়া হয়নি বলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে মতবিরোধ আছে। 

“আমরা থাইল্যান্ড থেকে চাল নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানের কারণে ভিয়েতনামের চালের দাম একটু বেশিই থাকে। দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে যেখান থেকে পারব চাল আনতে হবে। টাকা দিকে তাকিয়ে তো লাভ নেই।“ 

আমদানি শুল্ক কমানোর বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “আমরা বেসরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলাম। সেখানে ২৫ শতাংশ শুল্ক থাকার কারণে ৪৭ হাজার টনের মত চাল এসেছে। শুল্ক আরও ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। আমরা আশা করি কিছু চাল আরও আসবে। মোটা চাল নয়, নন-বাসমতি মধ্যম মানের সরু চাল আসবে বলে আমরা বিশ্বাস।" 

গত কয়েকদিন ধরে চালের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। সে কথা তুলে ধরে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, "আপনারা দেখেছেন বাজার দর নিম্নমুখী, চালের দাম কমেছে। মিলগেইট থেকে শুরু করে পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।”  

পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে সরকারিভাবে আরও চাল কেনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কারণ এবার প্রকৃতির অবস্থা খারাপ। আমনের ফলন কম হতে পারে।“ 

Share if you like

Filter By Topic