Loading...
The Financial Express

মেট্রো উচ্ছ্বাসের দ্বিতীয় দিনে যাত্রী পারাপারে কিছুটা গতি

| Updated: December 30, 2022 18:12:47


মেট্রো উচ্ছ্বাসের দ্বিতীয় দিনে যাত্রী পারাপারে কিছুটা গতি

দেশের প্রথম মেট্রেরেল দেখার উচ্ছ্বাস অব্যাহত আছে দ্বিতীয় দিনেও; কারিগরি বোঝাপড়ায় উন্নতি হওয়ায় যাত্রী পরিবহন আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে; সেই সঙ্গে কমেছে অপেক্ষার সময়।

আগের দিনের মতই শুক্রবার ছুটির দিন ভোর থেকে দর্শনার্থীরা স্টেশনের বাইরে অপেক্ষা শুরু করেন। সকাল ৮টা বাজতে বাজতে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের কেউ দীর্ঘ আকার পায়।

তবে টিকেট বিক্রির গতি বাড়ায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময়টা বৃহস্পতিবারের চেয়ে কমে এসেছে কিছুটা। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন জানা গেল, মোটামুটি ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মেট্রোর সিঙ্গেল জার্নি টিকেট। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

পরিবার নিয়ে মেট্রোতে চড়তে আগারগাঁও স্টেশনে আসা আরিফুল ইসলাম জানালেন, সকাল ৮টার কিছু পরে তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। ৯টার দিকেই টিকেট কাউন্টারের কাছে চলে এসেছেন।

সেখানে শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা জানালেন, দ্বিতীয় দিনে প্রায় দ্বিগুণ গতিতে যাত্রী পারাপার করা যাচ্ছে। আসা যাওয়ার চিত্রও আগের চেয়ে সুশৃঙ্খল হয়েছে।

 “আমরা এক সঙ্গে ৫০/৬০ জন করে যেতে দিচ্ছি। কিছুক্ষণ পরপরই যেতে দেওয়া হচ্ছে। ঝামেলা কিছুটা কমে এসেছে,” বলেন এক পুলিশ সদস্য।

অপেক্ষমাণ যাত্রীদেরও দেখা গেছে উৎসবমুখর। কিছুক্ষণ পর পর বাইরের লাইন থেকে যখন যাত্রী প্রবেশ করানো হচ্ছিল স্টেশনে, দূরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা তখন হৈ হৈ করে উঠছিলেন।

বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে টিকেট ভেন্ডিং মেশিনগুলো বার বার বিকল হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের হাতে একবার ব্যবহারযোগ্য টিকেট হস্তান্তর করতে পারছিলেন না কাউন্টারকর্মীরা। ফলে ট্রেনগুলোও ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক কম যাত্রী নিয়ে আসা যাওয়া করছিল। অন্যদিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ট্রেনে না চড়েই ফিরে গিয়েছিলেন অনেকে।

প্রথম দিনে এক প্রান্ত থেকে এসে নিচ না নেমে আবার টিকেট কেটে ফিরে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দিনে সেই সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাত্রীরা উত্তরা থেকে এলে স্টেশন প্লাজার নির্ধারিত পথ ধরে নিচে নেমে যেতে হয়েছে। আবার উত্তরা যেতে চাইলে নিচে লাইন ধরে অপেক্ষার পর আবার উপরে উঠতে পেরেছেন।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির ব্যবস্থাপক মহাফুজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যাত্রীরা বহির্গমন না করে আবার ফিরে যাবেন এমন নিয়ম নেই। তাদেরকে একবার বের হতে হবে। সবাইকে এভাবে আসা যাওয়ার সুযোগ দিলে তো বাইরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের আমরা সুযোগ দিতে পারব না। এখন যারা ভ্রমণ করছেন, তাদের অধিকাংশই দর্শনার্থী। শখের বসে তারা মেট্রো ট্রেনে উঠছেন।”

স্টেশনের শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত রোভার স্কাউট সদস্য শুভ চন্দ্র দাস জানান, ভেন্ডিং মেশিনগুলো এখন আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে। নরম হয়ে যাওয়া টাকা কিংবা অন্য কোনো কারিগরি কারণে মেশিন থেমে গেলে টেকনিশিয়ানরা কিছুক্ষণের মধ্যে তা আবার ঠিক করে দিচ্ছেন।

সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা গেল, একজন যাত্রী ভেন্ডিং মেশিন থেকে একসঙ্গে দুটি করে টিকেট কিনতে পারছেন। একজন যাত্রী নিজের জন্য প্রয়োজনীয় ছয়টি টিকেট কেটেছেন। এতে সময় লেগেছে দুই মিনিট।

ভোগান্তি কমাবে এমআরটি পাস?

গড়ে ১০ থেকে ১২ মিনিট পর পর স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ছেড়ে গেছে শুক্রবার। একই সময় পর পর ট্রেন আসছে।

ট্রেনে চড়ে দেখা যায়, একটি স্টেশন থেকে ছাড়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতি পাচ্ছে মেট্রোরেল। উত্তরার কাছাকাছি পৌঁছানোর পর গতি উঠে যাচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ কিলোমিটারে। মাঝে স্টেশনগুলোর পার হওয়ার সময় গতি কমে ৫০ কিলোমিটারে নেমে আসছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে মেট্রোরেলে দিয়াবাড়ি প্রান্তে গিয়ে অনেক যাত্রীই সেখানে খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আগের দিনের তুলনায় চা-নাস্তার দোকানপাটও বেড়েছে দিয়াবাড়িতে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক আগারগাঁওয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে। যাত্রীদের সহজে ভ্রমণের সুবিধার্থে আমরা এমআরটি পাস সংগ্রহের পরামর্শ দিচ্ছি।”

“৫০০ টাকা দামের একটি এমআরটি পাসে ৩০০ টাকা রিচার্জ করা থাকবে। এই পাস থাকলে কাউকে কোনো লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এক সঙ্গে অনেক মানুষ টিকেট কিনতে গিয়ে যে ভোগান্তিতে পড়ছেন, তারা এমআরটি পাস কিনে নিলে আর কোনো সমস্যার মুখোমুখি হবেন না। আমাদের কাউন্টারগুলোতেও চাপ কমবে।”

Share if you like

Filter By Topic