দেশের বাজারে চিনির দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেলেও ব্রাজিল থেকে প্রতি কেজি ৫৩ টাকায় কিনতে পারছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবি।
বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন পরিশোধিত চিনি কিনতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, “এতে প্রতি টন চিনির দাম ধরা হয়েছে ৫২৪ দশমিক ২১ ডলার। এই কেনাকাটায় বাংলাদেশি টাকায় মোট খরচ হবে ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৭ টাকা।”
টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে সুলভ মূল্যে পণ্য বিপণনের জন্য এই চিনি কিনছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
হিসাব কষে দেখা যায়, এই কেনাকাটায় প্রতি কেজি চিনির দাম দাঁড়াচ্ছে ৫২ টাকা ৭৯ পয়সা।
বাংলাদেশ বেসরকারি রিফাইনারিগুলোতে উৎপাদিত চিনির খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ টাকা থেকে ৯৫ টাকা। তবে গত এক মাস ধরে বাজারে চিনির সঙ্কটের কথা বলে এই দাম ১২০ টাকায়ও উঠেছে।
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের বাজারে চিনির সঙ্কট, তাই আমরা আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ব্রাজিল থেকে চিনি আনছি। এতে একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে; অন্য দিকে বাজারে সঙ্কটও দূর হবে।”
টিসিবি যে চিনি আনবে, সেখানে ভ্যাট ও রেগুলেটরি ডিউটিসহ অন্যান্য খরচ বাবদ কেজিতে অন্তত ২৫ টাকা যোগ হবে। সব মিলিয়ে প্রতি কেজিতে খরচ দাঁড়াবে ৭৮ টাকা।
এদিন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ছিল শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি সার কেনার প্রস্তাব।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান বিসিআইসি কাতারের মুন্তাজাত থেকে ১০ম লটে ২০১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯২১ টাকায় ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব দেয়। এতে প্রতি কেজি সারের দাম দাঁড়ায় ৬৭ টাকা ২৪ পয়সা।
আরেক প্রস্তাবে বিসিআইসি চট্টগ্রামের কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি থেকে ১৯১ কোটি ৩ লাখ ১১ হাজার ৮৩৭ টাকায় ৮ম লটে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া কেনার প্রস্তাব দেয়। এতে প্রতি কেজির দাম দাঁড়ায় ৬৩ টাকা ৬৭ পয়সা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএডিসির প্রস্তাবে এক লাখ টন এমওপি সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ৯০৬ কোটি ৬৯ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। প্রতি কেজির দাম পড়বে ৯০ টাকা ৬৬ পয়সা।
অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে আসা সার কেনার দুটি প্রস্তাবেই আাগের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়েরটি নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
কাতার থেকে আগের লটে যেখানে প্রতি টন ইউরিয়া ৬২৬ দশমিক ৬৭ ডলারে আনা হয়েছিল এবার আনা হয়েছে প্রতি টন ৬২৪ দশমিক ১৭ ডলারে, কাফকো থেকে আগে প্রতি টন ৬৫৫ ডলারে কেনা হলেও এবার কেনা হয়েছে ৫৯৭ ডলারে।