ব্যবসায়ীদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদের ‘দেশ ও মানুষের কথা’ ভাবতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার গণভবনে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধানের এ আহ্বান আসে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৯ এ সরকার গঠনের পর, আমাদের ব্যবসায়ীরা সে যে দলেরই হোক, আমরা কিন্তু ওখানে দল বাছতে যাইনি। যে দলেরই হোক, যাতে তারা ব্যবসাটা ব্যবসায়ী হিসেবে করতে পারে, সেই পরিবেশটা কিন্তু আমি সৃষ্টি করে দিয়েছি।”
তিনি বলেন, “এখানে কোন হাওয়া ভবনও নেই, আর পিএমওতে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে) কোনো উন্নয়ন উইংও নাই, যে হাওয়া ভবনে এক ভাগ দিতে হবে, উন্নয়ন ভবনে এক ভাগ দিতে হবে বা অমুক জায়গায় দিতে হবে। এই যন্ত্রণায়তো আপনাদের ভুগতে হয় না এখন আর। এটাতো আপনারা নিশ্চয় স্বীকার করবেন। সেই যন্ত্রণা থেকে তো সবাই মুক্ত।”
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “এখন প্রফিটের ব্যাপারে চিন্তা করেন। আগে তো একটা বড় অংশ হাওয়া হয়ে যেত। এখন আর সেই হাওয়া হওয়ার ব্যবস্থাটা নাই। সেখান থেকে সবাইকে মুক্ত রেখেছি। তো সেটাই মাথায় রেখে যদি মনে করেন যে– না, দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে...।”
আওয়ামী লীগ টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকায় যে ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এতদিন এই ১৪ বছর একটানা ধারাবাহিকভাবে আপনারা লাভজনক ব্যবসাটা করে গেছেন। … করোনার সময়… প্রণোদনা দিলাম, বিশেষ প্রণোদনা, আমার কাছে কেউ এসে দাবি করেননি। কেউ বলে নাই। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার একটা টিম খুব ভালো কাজ করছিল– যে কোথায় কি করা যেতে পারে। আমার অর্থনীতির চাকাটাকে চলমান রাখতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর মধ্যে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশযখন তাদের কারখানা বন্ধ রেখেছিল, বাংলাদেশে তার সরকার তখন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
“শ্রমিকদের বেতন, এই যে গার্মেন্টস, তার বেতন তো আমি দিয়ে দিলাম সব। প্রণোদনা প্যাকেজ করলাম, বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম।”
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণভবনের এই সভায় শেখ হাসিনা তেল, চিনিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দেশের সকল নাগরিকের কাছে ‘যথাযথ মূল্যে’ সরবরাহ করার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, টি কে গ্রুপের এমডি মোস্তফা হায়দার, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের অমিতাভ চক্রবর্তী, সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেডের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা, এস আলম গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার কাজী সালাউদ্দিন আহমেদ, দেশবন্ধু গ্রুপের এমডি গোলাম রহমান, মেঘনা গ্রুপের এমডি মোস্তফা কামাল ও এসিআই লিমিটেডের এমডি আরিফ দৌলা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।
অন্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।