বৈধ সঙ্গী সাথে থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়ার পর ওমরাহ ভিসা পাচ্ছেন একাকী নারীরা


FE Team | Published: October 16, 2022 19:52:21 | Updated: October 17, 2022 10:22:45


বৈধ সঙ্গী সাথে থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়ার পর ওমরাহ ভিসা পাচ্ছেন একাকী নারীরা

যেসব নারীদের হজ বা ওমরাহ করার ইচ্ছে আছে কিন্তু বৈধ পুরুষ সঙ্গী না থাকায় কিংবা ব্যয় দ্বিগুন হওয়ায় যেতে পারেননি তাদের জন্য সুখবর দিয়েছে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ।

নারীরা এখন থেকে একাকী হজ কিংবা ওমরা পালন করতে পারবেন। এজন্য তাদের সঙ্গে কোন মাহরাম বা পুরুষ সঙ্গী থাকা আর বাধ্যতামূলক হবে না।

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত এরই মধ্যে কার্যকর হয়ে গেছে। কয়েকজন বাংলাদেশি নারী এরই মধ্যে বৈধ পুরুষ সঙ্গী ছাড়া একাকী হজে যাওয়ার জন্য ভিসাও পেয়ে গেছেন। 

কয়েকদিন আগে মিশরে সৌদি দূতাবাসে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী ওই ঘোষণা দেন। মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহকে উদ্ধৃত করে সেদেশের সৌদি গেজেট এই খবর দেয়। à¦–বর à¦¬à¦¿à¦¬à¦¿à¦¸à¦¿ বাংলার।

গত ১০ই অক্টোবর সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ মিশরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এখন থেকে হজ ও ওমরাহ পালনে নারীরা একই সৌদি আরবে যেতে পারবেন তাদের সঙ্গে মাহরাম বা পুরুষ সঙ্গী থাকার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।

এতদিন ধরে নিয়ম ছিল যে, কোন নারী হজ বা ওমরাহ করতে সৌদি আরবে যেতে চাইলে সঙ্গে পুরুষ সঙ্গী থাকতে হতো। সেই তিনি হবেন এমন যার সামনে নারীর দেখা দেয়া বৈধ - অর্থাৎ স্বামী, পিতা বা ছেলে সন্তান হতে পারবেন মাহরাম।

কিন্তু হজে যেতে হলে আরেকজন সঙ্গীকে নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় বাংলাদেশের মতো অনেক দেশের নারী মুসলমানরা অনুৎসাহিত হয়ে পড়তেন।

এরকম একজন শাহনাজ পারভীন। তিনি বহুদিন ধরে হজে যাবেন বলে ভাবছেন। কিন্তু পুরুষ সঙ্গী না থাকায় এখনো তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি।

''প্রতিবছরই হজে যাওয়ার নিয়ত করি, কিন্তু এখনো যেতে পারি না। সরকারি বা বেসরকারি যেসব প্যাকেজ দেয়, সেখানে আমার একা যাবার সুযোগ নেই, তাহলে নাকি ভিসা পাবো না। আবার একা প্যাকেজ নিলে যে খরচ পড়তো, সঙ্গে আরেকজন যেতে হবে বলে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এসব কারণে এখনো হজ করা হয়নি'' তিনি বলছেন।

সৌদি মন্ত্রী জানিয়েছেন, ওমরাহ করার ক্ষেত্রে ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন কোটা বা সীমাবদ্ধতা নেই। সারা বিশ্ব থেকেই মানুষ যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরবে এসে ওমরাহ করতে পারেন।

তবে হজের ক্ষেত্রে দেশভেদে কোটা নির্ধারিত হয়েছে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়াহ বলেছেন, হজ এবং ওমরাহ করতে হাজীদের ব্যয়ভার যাতে কমে আসে, সেই চেষ্টা করছে সৌদি আরব। কিন্তু খরচের বিষয়টির সঙ্গে অনেকগুলো উপাদান যুক্ত। সেসব বিবেচনায় সৌদি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কবে থেকে হজ ও ওমরাহে যেতে পারবেন নারীরা

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকদিন আগে সৌদি মন্ত্রী এই ঘোষণা দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কোন চিঠি পাননি।

বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মতিউল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, সৌদি মন্ত্রীর ওই ঘোষণার বিষয়টি আমরাও নানা গণমাধ্যমের খবরে দেখেছি। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো সৌদি সরকার বা দূতাবাসের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

তবে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এম শাহাদত হোসাইন তসলিম বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সৌদি মন্ত্রীর ওই সিদ্ধান্তের পরপরই সেটি কার্যকর হয়ে গেছে। বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন নারী এর মধ্যে ভিসাও পেয়েছেন।

তবে হজের সময় কী নিয়মকানুন বা শর্ত আসতে পারে, সেটা তখন বোঝা যাবে বলে কর্মকর্তারা বলছেন।

তিনি বলছেন, নারীদের একা যাওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও আসলে কেউ একা একা যেতে চান না। সাধারণত দল বেঁধে বা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলে ওমরাহ করতে যান। আমাদের এখানে যারা ভিসা পেয়েছেন, তারাও আরও অনেকের সঙ্গে একত্রে যাবেন। কিন্তু আগে যেমন মাহরামকে সঙ্গে থাকতে হতো, তারও ভিসা করাতে হতো, এখন আর সেটা করতে হচ্ছে না।

যারা হজ বা ওমরাহ করতে যেতে চান, তারা নিজেরা বা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করেন। ঢাকায় সৌদি দূতাবাস ভিসা দিয়ে থাকে।

এতদিন একা কোন নারীকে হজ বা ওমরাহ করার জন্য সৌদি দূতাবাস ভিসা দিতো না।

কিন্তু নতুন নিয়ম চালু হওয়ার ফলে নারীরা চাইলে একাও ওমরাহ করার জন্য সৌদি আরবে যেতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৭০ হাজার নারী ওমরাহ করতে যান বলে হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে।

নতুন নিয়মের ফলে এই হার আরও বাড়বে বলে তারা আশা করছেন।

Share if you like