শরীর থেকে দুষিত পদার্থ বের করে দিতে কাজ করে কিডনি বা বৃক্ক।
দেহের এই যন্ত্র ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পানের গুরুত্ব অনেক। তবে ‘সোডা’ বা কোমল পানীয় উল্টো আরও ক্ষতি করে।
বংশগত কারণ, শরীরচর্চার অভাব, ধূমপান, রক্তচাপে বিশৃঙ্খলা, ডায়াবেটিস- এগুলো বৃক্কের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, ডাক্তারি ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি)।
তবে দৈনন্দিন কোন পানীয় পান করছেন সেটাও বৃক্কের রোগের কারণ হতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে কোমল পানীয় বা সোডা।
সাধারণ কিংবা ডায়েট, সব ধরনের সোডা পানীয় বৃক্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সোডা তৈরি উপকরণগুলো হল ক্ষতির নাটের গুরু।
২০১৫ সালে ইরানের ‘শহিদ বেহেস্তি ইউনিভার্সিটি অফ মেডিকেল সায়েন্স’য়ের করা গবেষণার ফলাফল থেকে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, “সপ্তাহে চারটির বেশি ‘সুগার সুইটেন্ড কার্বোনেইটেড ড্রিংকস’ বা কোমল পানীয় পান করলেই বৃক্কের রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটা।”
এতে থাকা চিনি বা শর্করা এখানে মুখ্য বিষয়। রক্তে এর মাত্রা যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় তখন রক্তনালী ও বৃক্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তে অতিরিক্ত শর্করা ও ডায়াবেটিস বৃক্কের বড় শত্রু।
সোডায় চিনির ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে খাদ্যাভ্যাসে এটি থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে যায়।
যাদের ডায়াবেটিস কিংবা বৃক্কের রোগ আছে তাদের জন্য কোমল পানীয় তাই নিষেধ ধরে নিতে হবে। বংশে এই রোগগুলো থাকলে সকলের উচিত কোমল পানীয় পান করায় খুব সাবধান থাকা।
নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ মেলিসা রিফকিন একই প্রতিবেদনে বলেন, “সোডা বা কোমল পানীয় বিশেষ করে কোলা-সোডাতে আরেকটি উপাদান থাকে তা হল ‘ফসফরিক অ্যাসিড’। এই উপাদান বৃক্কে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। আর সেখান থেকেও নানান রোগের সৃষ্টি হয়।”
যাদের বৃক্কে পাথর হয়েছে বা ‘কিডনি ডিজিজ’ আছে তাদেরকে বর্তমানে কোলা-ধর্মী যে কোনো পানীয় পান করতে নিষেধ করা হয়। এমনকি যাদের এই ধরনের রোগ নেই তাদের ক্ষেত্রেও দিনে দুইয়ের অধিক এই ধরনের পানীয় পানে ‘সিকেডি’ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবে বলেন মন্তব্য করেন এই পুষ্টিবিদ।
ফসফরিক অ্যাসিডের পাশাপাশি ‘ডায়েট’ কোমল পানীয়তে যে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা হয় সেটাও বৃক্কের বিভিন্ন রোগের কারণ। ২০১১ সালে ‘ক্লিনিকাল জার্নাল অফ দি আমেরিকান সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি’তে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, প্রতিদিন দুইয়ের অধিক কৃত্রিম চিনিযুক্ত কোমল পানীয় গ্রহণের সঙ্গে বৃক্কের কার্যকারিতা কমার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গেছে। আর এই ক্ষেত্রে নারীরা ভুক্তভোগী বেশি।