মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বর্তমান সরকারকে ‘বিদায় করতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় তিনি বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যেভাবে জীবন দিয়ে আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, সেই স্বাধীনতার মূলমন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই মুক্তিযোদ্ধাদের, এই বুদ্ধিজীবীদের সেই স্বপ্ন আমাদেরকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
“সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এজন্য আমরা সারাদেশের মানুষ প্রস্তুত।”
বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সভায় এই বিএনপি নেতা বলেন, “আমরা শুরুতে ১০ দফা প্রণয়ন করেছি। আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে জনগণের যে সরকার হবে, সেই সরকারে যদি জনগণ বিএনপিকে, বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে নির্বাচিত করে তাহলে দেশ আমরা কীভাবে মেরামত করব তার রূপরেখা ইনশাল্লাহ অচিরেই জনগণ ও জাতির সামনে উপস্থাপন করব।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের সাহস’ ধারণ করে ‘গণতন্ত্র মুক্ত’ করার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
দেশজুড়ে বিভাগীয় সমাবেশ চলাকালে এবং ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে ঘিরে দুই দলের কথার খেলার মধ্যে নয়া পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানের পর দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আটক করা হয় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মিজা আব্বাসকে।
এসব ঘটনার মধ্যে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে গত শনিবার সমাবেশ করে বিএনপি, যেখানে দলের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন খন্দকার মোশাররফ।
বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনাসভায় সেই দাবির প্রসঙ্গ টেনে তার অভিযোগ, “আমরা বিভাগীয় সমাবেশে দেখেছি, জনগণ পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধবংস করেছে, বিচার বিভাগকে ধবংস করেছে, সমাজকে কলুষিত করেছে তারা এই রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না।
“জনগণ এখন পরিবর্তন চায় এবং সেই পরিবর্তন কারা করছে? একটু ইতিহাস দেখেন বাকশালের হাত থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আবার এরশাদের সময়ে এদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে স্বৈরতন্ত্র হয়েছিল। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া আপোষহীন সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
“আজকে বিএনপি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক সকল শক্তির দায়িত্ব এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং জনগণ যে পরিবর্তন চায় সেই পরিবর্তনের সূচনা করা।”
এর আগে সকালে খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও সাংবাদিক এম এ আজিজ বক্তব্য রাখেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।