Loading...

বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব বাইক

| Updated: June 29, 2022 20:14:19


ছবি: বাইকরাডার ছবি: বাইকরাডার

জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী সবার কপালেই চিন্তার ভাঁজ একেছে। বিশ্বব্যাপী নানা কর্মপরিকল্পনাও গৃহীত হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনকে আয়ত্তে আনতে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে যে পরিমাণ দূষণ হচ্ছে, তাতে এই শতাব্দীতে পৃথিবীর তাপমাত্রা ২.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে মোকাবেলা করতে বিশ্বব্যাপী নানা পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় রিসাইকেলড প্লাস্টিক থেকে বাইসাইকেল তৈরি করেছে জার্মানির এক কোম্পানি 'ইগাস'। শুধু তাই নয়; এই বাইকে মরিচা পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং তেলেরও প্রয়োজন নেই! এটিই বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব বাইক, এমনটাই দাবি করছেন বাইক প্রস্তুতকারক এই কোম্পানিটি। বাইকটাকে বলা হচ্ছে ইগাস:বাইক

বাইকটির প্রস্তুতকারকদের মতে, এই বাইকে শুধু টায়ার ছাড়া পুরোটাই রিসাইকেল করা প্লাস্টিকে তৈরি। প্রস্তুতকারকরা মনে করেন, বাইক নির্মাতাদের প্রথাগত লিনিয়ার ইকোনোমিক মডেল থেকে বের হয়ে আসা উচিত। ইগাস:বাইকে টায়ার ছাড়া পুরো অংশই রিসাইকেল বা নবায়নযোগ্য প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। এ বাইকে যেসব প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো মূলত একক ব্যবহারের প্লাস্টিক হিসেবে তৈরি করা ছিল।

ইগাস কোম্পানিটির দাবি, এই বাইক পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না। এমনকি এই বাইকের ধাতব অংশগুলোকেও তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিক দ্বারা! এতে বাইকে মরিচা পড়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ইগাস: বাইক মূলত একটি সিঙ্গেলপিসড আরবান বাইক। বেল্ট ড্রাইভ সিস্টেম ব্যবহার করে বাইকটি তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু সিংগেল স্পিড ড্রাইভট্রেন এবং সেই সাথে বাইকটি তুলনামূলক ভারি হওয়ায় এই বাইক সমতলে ব্যবহার করার উপযুক্ত এবং চালনা করাও সুবিধাজনক হবে।

কোম্পানির প্রস্তুতকারকদের ভাষ্যে, এ বাইকের বেয়ারিং, ধাতব ট্রেন এবং অন্যান্য ধাতব অংশ যেগুলো থেকে বাইকে মরিচা পড়ার বিস্তর সম্ভাবনা থাকে এ বাইকে সেসব এড়ানো হয়েছে এবং সেসব অংশে ব্যবহার করা হয়েছে প্লাস্টিক। এতে বাইক হবে মরিচামুক্ত। যে প্লাস্টিক এই বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে তা হালকা ওজনের, লুব্রিকেন্ট মুক্ত এবং উচ্চ পার্ফরম্যান্স ক্ষমতা সম্পন্ন ।

হুইল বেয়ারিং - এর দুই - কম্পোনেন্ট বল বেয়ারিং থেকে শুরু করে সিট পোস্টে প্লেইন বেয়ারিং, ব্রেক লিভার এবং প্যাডেল সব জায়গাতেই আছে রিসাইকেল করা প্লাস্টিক। এখানে আছে ‘ভি’ আকৃতির ব্রেকার।অন্যদিকে বাইক চলার ক্ষেত্রে কোনো তেলের প্রয়োজনও পড়বে না। এখানে সলিড লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে এবং এতে বাইকের বিভিন্ন অংশগুলোর মধ্যে ঘর্ষণ কম হয়। আর যেহেতু গাড়িতে তেলের প্রয়োজন নেই, তাই ধুলাবালি, ময়লা জমার সম্ভাবনাও নেই।

তবে ইগাসকোম্পানির উল্লেখযোগ্য ও ব্যতিক্রমী দিক এই যে, এই কোম্পানির উদ্ভাবিত পেটেন্ট দিয়ে যাতে বিশ্বের অন্য কোম্পানিগুলোও পরিবেশবান্ধব নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে জার্মান এই কোম্পানি। যেখানে অন্যান্য কোম্পানি তাদের উদ্ভাবিত পেটেন্ট অন্য কোম্পানিদের ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বাধা দেয়।

এই বাইকটির দাম হতে পারে ১ হাজার ৪০০ ইউরো যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমানে এই বাইকটি প্রোটোটাইপ হিসাবে আছে এবং বাজারে আসতেও সময় লাগবে। তবে এটি একটি কার্যকরী উদ্ভাবন হবে বলে আশাবাদী ইগাস কোম্পানি।

অর্থী নবনীতা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করছেন। [email protected]

Share if you like

Filter By Topic