চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশ মন্দায় পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান।
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের অর্থনীতির চাকা মন্থর হওয়ায় গেল বছরের তুলনায় ২০২৩ সাল ‘আরও কঠিন’ হতে যাচ্ছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ইউক্রেইনে যুদ্ধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি, উচ্চ সুদহার ও চীনে কোভিডের বিস্তৃতি বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করায় এমনটা হতে যাচ্ছে বলে তার শঙ্কা। গত বছরের অক্টোবরেই আইএমএফ তাদের আগের পূর্বাভাসের তুলনায় ২০২৩ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খানিকটা কম হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল।
“আমাদের ধারণা, বিশ্ব অর্থনীতির এক তৃতীয়াংশ মন্দায় পড়বে। এমনকী যেসব দেশ মন্দায় পড়বে না, সেখানেও কোটি কোটি মানুষ মন্দা অনুভব করবে,” সিবিএস নিউজের ফেইস দ্য নেশন প্রোগ্রামে জর্জিয়েভা এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইউক্রেইনে যুদ্ধ এবং মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা সামাল দিতে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়ায় অক্টোবরে আইএমএফ ২০২৩-এ আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল।
এরপর চীন তার ‘শূন্য কোভিড নীতি’ বদলে ফেলে অর্থনীতি সচল করার কাজ শুরু করে। অবশ্য বিধিনিষেধ তুলে ফেলায় দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জর্জিয়েভা ২০২৩ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের শুরুটা কঠিন হবে বলেও সতর্ক করেছেন।
“পরের কয়েকটি মাস চীনের জন্য কঠিন যাবে। চীন, ওই অঞ্চল এবং বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে এর প্রভাব হবে নেতিবাচক,” বলেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সংগঠন আইএমএফের সদস্য দেশের সংখ্যা ১৯০। এরা সবাই মিলে বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে। আইএমএফের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা নিয়ে আগেভাগে সতর্ক করা।
কয়েকদিন আগে প্রকাশিত তথ্যে তারা ২০২২ সালের শেষে চীনা অর্থনীতির দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করেছিল।
ডিসেম্বরের সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনা সূচকই (পিএমআই) দেখাচ্ছে, চীনের কারখানাগুলোর কর্মকাণ্ড টানা তৃতীয় মাস এবং তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে সংকুচিত হয়েছে।
একই মাসে দেশটির ১০০টি শহরে বাড়ির দামও কমেছে, টানা ছয় মাস ধরে এই নিম্নমুখী হার দেখা যাচ্ছে বলে চীনের অন্যতম বড় ও স্বাধীন প্রোপার্টি রিসার্চ ফার্ম চায়না ইনডেক্স একাডেমির জরিপ বলছে।
‘শূন্য কোভিড নীতিতে’ বদল আনার পর জনসমক্ষে প্রথম মন্তব্যে শনিবার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং চীন ‘নতুন পর্যায়ে’ প্রবেশ করেছে জানিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে আরও বেশি উদ্যমী ও ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছেন।