সমাপনী উৎসবের (র্যাগ) জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে মদ আনতে গিয়ে সাবেক শিক্ষার্থীসহ চারজন পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ প্রথমে চারজনকে আটক করলেও পরে চালককে ছেড়ে দেয়।
বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান জানান, অ্যাম্বুলেন্সে ১৫-২০ বোতল মদসহ ঢাকা ব্যাংকের সামনে থেকে শনিবার রাত ৮টার দিকে চারজনকে তারা আটক করেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
আটকরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রিপন সাহা ও জুয়েল আহমেদ, তাদের সহকারী সাভার এলাকার জীবন এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল্লাহ দুলাল।
পরে রোববার দুপুরে পুলিশ অ্যাম্বুলেন্স চালক দুলালকে ছেড়ে দেয় বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি। অ্যাম্বুলেন্স চালককে ছাড়িয়ে এনেছি। রাস্তায় আছি, ক্যাম্পাসে ফিরতেছি।”
বাকি তিনজন থানাতেই রয়েছে।
পুলিশ জানায়, আটকদের মধ্যে রিপন বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। আর জুয়েল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা চালাননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের টেকনিক্যাল অফিসার জাকারিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকার ইসলামিয়া হাসপাতাল থেকে চালক আব্দুল্লাহ দুলালের ফেরার কথা ছিল। কিন্তু রোগী আনার কথা বলে তিনি অ্যাম্বুলেন্স বংশালে নিয়ে যান। যারা গাড়ি বরাদ্দ নিয়েছিলেন তাদের নাম নিবন্ধন করা হয়, তবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে না।
“প্রাথমিকভাবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ড্রাইভারের কাছে জমা দিলে ড্রাইভার সেটা এন্ট্রি করে। পরে মাস শেষে আমাদের কাছে জমা দেয়। এজন্য কে বা কারা বরাদ্দ নেয় সে তথ্য প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে থাকে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা শামসুর রহমান বলেন, “যে অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় আটকে আছে আমরা সেটি আনার ব্যবস্থা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।”
এদিকে শিক্ষা সমাপনী উৎসবের (র্যাগ) আহ্বায়ক প্রীতম আরিফের দাবি, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
সাবেক শিক্ষার্থীরা কীভাবে গাড়ি বরাদ্দ নিতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে জানতে চাইলে বলেন, “জাহাঙ্গীরনগরে এটা একটা কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে যার মত ক্ষমতা দেখিয়ে কাজ করে নিচ্ছে। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।”
“যেহেতু অ্যাম্বুলেন্স আর ড্রাইভার বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ, সুতরাং তাদের কীভাবে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনা যায় সে ব্যবস্থা চলছে। অন্যদের ব্যাপারে আমাদের কোনও দায় নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, “আমরা চাই শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের নামে এ ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ হোক। যেহেতু এ ধরনের অনুষ্ঠান হাই কোর্ট থেকে নিষেধ রয়েছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা যেন এগুলো বন্ধ করে, তবুও তারা শুনতেছে না।”