বিজয় দিবসের প্রত্যুষে স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল বেদীতে ফুল দিয়ে একাত্তরের সেই মুক্তিসেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান, যাদের রক্তের বিনিময়ে দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটেছিল, বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান শহীদ বেদীর সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ পেয়েছে স্বাধীনতা।
তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সামরিক কায়দায় সালাম জানায়। শহীদদের স্মরণে বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
শুক্রবার ভোরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তির আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব।
শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রধান বিচারপতি ও তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে।
বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ভরে উঠতে থাকে শহীদ বেদী।
সাভারের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেন তিনি।
সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সীলমোহর অবমুক্ত করবেন।
পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার জন্য যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তা সফল পরিণতি পায় নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।
সেদিন ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করেন যুদ্ধে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেওয়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী।
তাই ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস; বিশ্বের হাতেগোনা যে ক’টি দেশের স্বাধীনতা দিবসের পাশাপাশি বিজয় দিবসের মতো উৎসবের উপলক্ষ রয়েছে, তার একটি বাংলাদেশ।