‘বিএনপির সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগ শংকিত’ -বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২ হাজার মানুষের সমাবেশ করে অভ্যস্ত বিএনপি নেতারা ১০-১৫ হাজার মানুষের সামনে বক্তব্য দিতে গিয়ে একটু খেই হারিয়ে ফেলেছেন।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী খুলনায় বিএনপি’র শনিবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে বলেন, “তারা (বিএনপি নেতারা) অনেক কথাই বলছেন আর আমাদের কর্মীরা বলেছেন যে, তাদের সমাবেশ দেখে ভয় লাগা তো দূরের কথা, আমাদের কাতুকুতু লেগেছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “গত পরশুদিন বিএনপি খুলনায় সমাবেশ করতে গিয়ে খুলনায় নবনির্মিত রেল স্টেশনে ভাংচুর করেছে, দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। বিএনপি নেতারা বলেছেন যে, বাস-লঞ্চ এগুলো বন্ধ। বাস-লঞ্চের মালিকরা নিজেরাই ধর্মঘট ডেকেছে। এখানে সরকার কিংবা সরকারি দলের কোনো হাত নেই।”
তিনি বলেন, “২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি যেভাবে বাসে, লঞ্চে আগুন দিয়েছিল, জীবন্ত শ্রমিকদেরকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিয়ে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছিল, এ জন্য স্বাভাবিকভাবেই বাস এবং লঞ্চের মালিক ও শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন ছিল এবং সেই সব ও অন্যান্য কারণে তারা ধর্মঘট ডেকেছিলেন।”
এ সময় হাছান মাহমুদ তার ট্যাবে ২০১৩-১৪-১৫ সালের কিছু সংবাদচিত্র সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, ‘দেখুন বিএনপির দেওয়া আগুনে বাস, লঞ্চ ও শ্রমিকরা কিভাবে পুড়ে মৃত্যুবরণ করেছে। বিএনপি’র এই অপরাজনীতির আগুনের কারণেই তারা ধর্মঘট ডেকেছে।’
‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না’ বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া বেশ ক’বার বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রথমে ২৯টি আসন পেয়েছিল অর্থাৎ ৩০টির কম। পরবর্তীতে উপনির্বাচনের পর তাদের আসন সংখ্যা বেড়েছিল। আর আওয়ামী লীগ তখন তিন চতুর্থাংশ আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছিল।’
আবার ২০১৮ সালে বিএনপি ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম সবাইকে নিয়ে, ড. কামাল হোসেনকে ‘হায়ার’ করে ঐক্য করে মাত্র ৫টি আসন পেয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বেগম জিয়ার ৩০ আসনের বক্তব্য যেমন তাদের বেলায় ঘটেছিল, আমার আশঙ্কা, ফখরুল সাহেবের এই ১০ আসনের বক্তব্যও আবার তাদের বেলায় ঘটে কি না।’
বিএনপি যাতে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য সরকার সহযোগিতা করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ খুলনায় প্রচন্ড ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছে। পুলিশের ওপর তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে, এরপরও পুলিশ এবং আমাদের নেতাকর্মীরাও ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়েছে। বিএনপি নির্ঝঞ্ঝাটভাবে সমাবেশ করেছে। আর বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমাদের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা হয়েছে। কিবরিয়া সাহেব, আহসান উল্লাহ মাস্টারের সমাবেশে হামলা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের সরকারের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দিচ্ছেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আসলে জাতীয় পার্টিকে তো নানা জনে ‘বি টিম’ বলে, তাই উনারা যে বিরোধী দল এটি দেখানোর জন্য তিনি কিছু কড়াকড়া বক্তব্য রাখছেন, এটি ভালো। আমি আশা করবো, জাতীয় পার্টির আভ্যন্তরীণ যে গন্ডগোলগুলো চলছে এগুলো তারা নিরসন করতে পারবে।’