হাত খরচের জন্য বাড়তি টাকা চাই বা নতুন ভিডিও গেইম কিনতে ইচ্ছা হয়েছে? আগে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ‘পিচ করে’ রাজি করতে হবে বাবাকে। বিবিসি’র বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এ খবর জানিয়েছে।
সন্তানের জনসমক্ষে কথা বলার এবং মানুষকে রাজি করানোর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য এ কৌশল বেছে নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাফোক কাউন্টির এক বাবা।
মহামারীর লকডাউনে ঘরবন্দী থাকার পর দুই সন্তানের মধ্যে ১৫ বছর বয়সী জশুয়া ক্লাসের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না জেনে এই অভিনব কৌশলের শরণাপন্ন হয়েছেন ফিল কুইকেনডেন।
প্রতি মাসে অভিভাবকদের কাছ থেকে পকেট মানি বা হাত খরচের টাকা পান কুইকেনডেন পরিবারের দুই সন্তান। তার মধ্যে ১০ বছর বয়সী স্যাম ইতোমধ্যেই বাবাকে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেখিয়ে নতুন ভিডিও গেইম বা অন্য কিছুর খরচ মেটাতে রাজি করাতে বেশ পরিপক্ক বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“ওদের জন্য নিজের দক্ষতা পরীক্ষা করার খুবই ভালো একটা উপায় এটা, এতে ওদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে এবং লকডাউনে সামাজিক মেলামেশার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল তার কিছুটা হলেও পূরণ হচ্ছে,” বিবিসিকে বলেছেন বাবা কুইকেনডেন।
এর ফলে ক্লাসে এবং ক্লাসের বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জশুয়ার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“স্যাম সমবয়সীদের সঙ্গে আগে থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিল এবং এখন সেটা আরও ভালো হয়েছে,” ছোট ছেলের ব্যাপারে বলেন বাবা।
“ও আরও ভালো করে গুছিয়ে কথা বলতে পারে এবং খুশি মনেই মানুষের সঙ্গে আলাপ করে। তাই এটা (পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন) আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”বিবিসি জানিয়েছে, কুইকেনডেন একজন সরকারি কর্মচারী। কাজের প্রয়োজনে ‘প্রচুর’ প্রেজেন্টেশন বানানো এই বাবা মনে করেন শিশুদের জনসমক্ষে কথা বলার আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য স্কুলগুলোর তৎপরতা আরও বাড়ানো উচিত।
তরুণ সহকর্মীদের অনেকের পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহারের কারিগরি সক্ষমতা থাকলেও সবার মনোযোগ আকর্ষণ করার দক্ষতায় ঘাটতি আছে বলে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন কুইকেনডেন।
“তারা কারিগরি জ্ঞান থেকে স্লাইড বানাতে জানে, কিন্তু মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে স্পষ্টভাষায় কিছু গুছিয়ে বলে বোঝানোর সক্ষমতা একেবারেই ভিন্ন কিছু।”
“এখানে আত্মবিশ্বাসও খুব গুরুত্বপূর্ণ” বলে মন্তব্য কুইকেনডেনের।
গত ১৫ বছরে কর্মক্ষেত্রের চাহিদাগুলোর ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন এসেছে এবং বিশেষ করে কোভিড মহামারীর লকডাউনে বাস্তবতা অনেক বেশি পাল্টে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
“আমি মনে করি প্রযুক্তির উন্নতি ও বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে দুজন মানুষের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার গুরুত্বও বাড়ছে।” একজন মানুষের সঙ্গে মন খুলে কথা বলার যে অনুভূতি, কম্পিউটার কখনোই সে অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করতে পারবে না বলে মন্তব্য কুইকেনডেনের।