বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে অপরাধ গণ্য করে পাস হওয়া নতুন আইনে ইন্দোনেশিয়া ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
‘বালি বংকিং ব্যান’ নামে পরিচিতি পাওয়া নতুন ওই আইনে অবিবাহিত যুগল একসঙ্গে কোথাও থাকলে সর্বোচ্চ ছয় মাস এবং যৌন সম্পর্কে জড়ালে সর্বোচ্চ এক বছরপর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
তবে বালির গভর্নর বলছেন, কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের বৈবাহিক অবস্থা, অর্থ্যাৎ কেউ বিবাহিত না অবিবাহিত, তা খতিয়ে দেখবে না।
নতুন আইনটি তিন বছরের মধ্যে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও এটি নানান আইনি বাধার মুখোমুখি হতে পারে বলে ধারণা বিবিসির।
ধর্মীয় রক্ষণশীলতা বাড়তে থাকা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি সম্প্রতি তাদের দণ্ডবিধিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে, নতুন আইনটি তারই অংশ।
বহির্বিশ্বে যদিও কেবল বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্ককে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি বেশি মনোযোগ কেড়েছে, কিন্তু নতুন দণ্ডবিধিতে প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্টের সমালোচনা অপরাধ হিসেবে আরও অনেক কিছুই আছে, যা ইন্দোনেশিয়ার অনেক নাগরিককেই আতঙ্কিত করছে।
জাতিসংঘ এসব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, আইনগুলোতে ‘ইন্দোনেশীয় মূল্যবোধ’ প্রাধান্য পেয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত পর্যটন নিয়ে। তাদের ভয়, এসব আইন পর্যটকদের কাছে ইন্দোনেশিয়ার আকর্ষণ কমিয়ে দেবে, যা কোভিড মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা দেশটির অর্থনীতিকে বড় ধরনের ধাক্কাও দিতে পারে।
২০১৯ সালে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ ইন্দোনেশিয়ায় ঘুরতে গিয়েছিলেন।
বিয়েবহির্ভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধের এ নতুন আইনের আওতায় কার্যত স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশিরাও পড়েন। তবে ইন্দোনেশীয় কর্মকর্তারা বিদেশিদের এই আইনে সাজা পেতে হবে না বলে তাদের ভয় কমানোর চেষ্টা করছেন।
“বালি বালির মতোই স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক, ঘোরার জন্য নিরাপদই থাকবে,” বলেছেন সেখানকার গভর্নর ওয়ায়ান কোস্তের।
হোটেল বা অন্য যে কোনো বাসস্থানে থাকার ক্ষেত্রে পর্যটকদের তাদের বৈবাহিক অবস্থার প্রমাণ দিতে হবে না, স্থানীয় কর্মকর্তারাও এসবের খোঁজ নিতে যাবেন না, বলেছেন তিনি।
ইন্দোনেশিয়ার উপ-বিচারমন্ত্রীও বিদেশিদের সাজা পেতে হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
“বিদেশি পর্যটকদের জোর দিয়ে বলতে চাই, দয়া করে ইন্দোনেশিয়ায় আসুন, কেননা নতুন এ আইনে আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে না,” সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন এডওয়ার্ড ওমর শরীফ হায়ারিয়েজ।
দেশটির সরকার বলছে, নতুন দণ্ডবিধি অনুযায়ী বিবাহবহির্ভূত যুগলের বসবাস ও যৌন সম্পর্ক তখনই বিচারে গড়াবে যখন যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কারও স্বামী/স্ত্রী, সন্তান বা পিতামাতা অভিযোগটি করবেন।
এই বিধান অনুযায়ী বিদেশিদের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, বলছেন কর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।