বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৪০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী নেপাল; পরে এই পরিমাণ আরও বাড়ানো যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির নতুন রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী।
পাশাপাশি নেপালের রপ্তানি বাণিজ্যের সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা বন্দর ব্যবহারের আগ্রহের কথাও তিনি বলেছেন।
মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এই আগ্রহের কথা তুলে ধরেন নেপালের রাষ্ট্রদূত।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, “নেপাল তাদের রপ্তানির সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা বন্দর ব্যবহার করতে চায়। রাষ্ট্রদূত ভাণ্ডারী জানিয়েছেন, তার দেশ বাংলাদেশকে একটু ‘বিশেষ’ দৃষ্টিতে দেখে থাকে।
“তারা (নেপাল) ৪০ থেকে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখন দেবে বাংলাদেশকে। আর একটা মেগা প্রজেক্ট করছে বিদ্যুৎ সেক্টরে। ওটা শেষ হলে বাংলাদেশকে আরও বেশি বিদ্যুৎ দিতে পারবে।”
ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে তিনি দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে চান। দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও তিনি জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নেপালের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং তাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য ওই সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কেবল সমর্থন নয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তারা অস্ত্র ও গোলাবারুদও সরবরাহ করেছিল।
ইহসানুল করিম জানান, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে, বিশেষ করে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠকে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে নেপালের রাষ্ট্রপতির সফরে দুই দেশের সম্পর্ক ‘নতুন মাত্রা পেয়েছে’ মন্তব্য করে দেশটির রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান সরকারপ্রধান।
বাংলাদেশে বহু নেপালি শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার করার বিষয়টি তুলে ধরে ঘনশ্যাম ভাণ্ডারী তার দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোসিও এদিন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন বলে জানান প্রেস সচিব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশ এই বাণিজ্যের ক্ষেত্রকে আরও এগিয়ে নিতে কাজ করতে পারে।
সাংস্কৃতিক কিছু সাদৃশ্যের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ফার্সি ভাষার অনেক শব্দ বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, তাদের (রোহিঙ্গা) প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইরানকে পাশে পাবে বাংলাদেশ।
অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।