Loading...
The Financial Express

বর্ষবরণে বিধিনিষেধ ভাঙল; ফুটল পটকা, উড়ল ফানুস

| Updated: January 01, 2023 18:45:54


বর্ষবরণে বিধিনিষেধ ভাঙল; ফুটল পটকা, উড়ল ফানুস

নতুন ব্ছর উদযাপনের আনন্দে নিষেধাজ্ঞা হারিয়ে গেল কিছু সময়ের জন্য; ক্ষণে ক্ষণে বাজি ও পটকা ফোটানোর কেঁপে উঠল ঢাকা, রঙিন হয়ে উঠল রাতের আকাশ, অসংখ্য ফানুস আলো ছড়াল নগরীজুড়ে। সবাই বলে উঠল স্বাগতম ২০২৩!

প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দলবেধে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মত আতশবাজি পোড়াতে, ফানুস ওড়াতে দেখা গেছে রাজধানীর একের পর এক এলাকাতেও।

যারা আগেভাগে লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ঠিক বছর শুরুর সময়টাতে বাজির শব্দে ওম ছেড়ে এসে দাঁড়িয়েছেন বারান্দায়; স্বাগত জানিয়েছেন নতুন বছরকে।

নগরজুড়ে বিধিনিষেধের মধ্যেই অনেকেই ঘরের বারান্দায় থেকে, কেউবা বাসার ছাদে উঠে আর গলি ও পাড়া মহল্লায় বাজি ফুটিয়ে, আনন্দ উল্লাসে নতুন ইংরেজি বছরকে বরণ করে নিলেন। বিদায় জানালেন পুরনো বছরকে; আশায় রইলেন যুদ্ধের অশনি কাটবে নতুন দিনে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুঁশিয়ারির মধ্যে কড়াকড়ির ঘেরাটোপে বন্দি নগরবাসীর অন্য অংশের চেয়ে ইংরেজি নতুন এ বছর বরণে বাড়তি রঙ ছড়াতে দেখা গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়লয় এলাকায়। টিএসসিতে বিদায় ও বরণের ক্ষণ উৎসবের আমেজ পেল।

উল্লাস-উদ্দীপনা আর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সমস্বরে ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রাত ১২টা ১ মিনিট বাজার সঙ্গে সঙ্গেই হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সম্মিলিত উল্লাস ধ্বনিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) পরিণত হয় ‍উৎসবস্থলে। শিক্ষার্থীরা আতশবাজি পুড়িয়ে পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে নেন। উদযাপনের আনন্দে বিধিনিষেধের বেড়াজাল তাদের কাছে বাধা হয়ে থাকল না।

খ্রিস্টীয় বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে গত কয়েকবছর ধরেই বাজি-পটকা এবং ফানুসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে প্রতিবছরের মত এবারও নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে নতুন বছরের প্রথম প্রহরে ঢাকা কেঁপে উঠেছে বাজি-পটকার শব্দে। আকাশে ভেসেছে অসংখ্য ফানুস। আতশবাজির আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে ঢাকার আকাশ।

পুরনো বছরকে বিদায় জানানোর আমেজ শনিবার দিনভরই ছিল। সন্ধ্যার পর তাতে লাগল উদযাপনের রঙ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে রাত আটটার পর ঢোকা বন্ধ হয়ে গেল অনেক এলাকায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গুলশান, বনানী, হাতিরঝিলের রাস্তায় পড়ল ব্যারিকেড। বের হওয়া গেলেও এসব এলাকায় ঢোকা বন্ধ ভোর পর্যন্ত। উন্মুক্ত স্থানে কনসার্ট বা ডিজে পার্টিও ছিল বন্ধ। তবুও ছাদবন্দি উদযাপনে যার যার মত উপায় খুঁজে নিয়েছেন নগরবাসী।

এদিন সন্ধ্যা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে গড়ে তোলা হয় কঠোর নিরাপত্তা বলয়। আইডি কার্ড ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে হাজার হাজার মানুষকে ফিরে যেতে হয়। তারপরেও উৎসবের কমতি দেখা যায়নি।

ডিএমপির পাশাপাশি গতবারের উদযাপনের সময় ফানুস ও পটকা থেকে কয়েকশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার উদাহরণ থেকে এবার আগেভাগে সর্তক করে ফায়ার সার্ভিসও।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিনও অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ফানুস না উড়ানোর অনুরোধ জানান।

শেষ পর্যন্ত হুঁশিয়ারি বা অনুরোধ কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। নতুন বছরের কয়েকদিন আগে থেকেই পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ফানুস আর পটকা-আতশবাজির পসরা সাজিয়ে বসে।

র‌্যাব-পুলিশের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থেকে তরুণ-কিশোরেরা আতশবাজি, পটকা আর ফানুসকেই বেছে নিয়েছে নতুন বছরকে উদযাপনের অনুষঙ্গ হিসেবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ইংরেজি নতুন বছর নিজস্ব সংস্কৃতি না হলেও একে উদযাপন করছি। এটাও আমাদের ঐতিহ্য।

“তারুণ্যের উচ্ছ্বাস আর উল্লাসের মধ্য দিয়ে আমরা নববর্ষকে স্বাগত জানাচ্ছি।“

সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আরাফাতুল ইসলাম বলেন, বন্ধুদের নিয়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারও টিএসসিতে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করছি। তবে আগের চেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কিছুটা কম।

বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আসতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কারণে অনেক সময় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

Share if you like

Filter By Topic