সংকটে-সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানান, সন্ধা ৬টা ২০ মিনিটে বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের এই কাণ্ডারী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। রোববার মধ্যরাতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) তাঁর মৃত্যু হয়।
সোমবার দুপুর আড়াইটায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হয়। সম্মিলিত সাংস্কৃতি জোটের আয়োজনে সেখানে বিভিন্ন সংগঠনসহ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হন তিনি।
প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, দীপু মনি, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ কেন্দ্রীয় নেতারা শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, “দলের সংকটে তিনি সাহসী নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক এবং আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহকর্মী।”
“বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক বড় অধ্যায় জুড়ে রয়েছেন তিনি। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি রণাঙ্গনেও ছিলেন সৈনিক। স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর দেশ পুনর্গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।
“তারপর আবার সংকট, রক্তাক্ত পঁচাত্তরের পর প্রত্যেকটি সংকটে তিনি ছিলেন। অনেকে জানে না, তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অনেক দিন বন্দি ছিলেন। তার শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়।”
শহীদ মিনার থেকে বিকাল ৫টার দিকে তার মরদেহ নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপতিম সংগঠন যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলীয় নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
দাফনের সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার সকালে ফরিদপুরের নগরকান্দার এমএন একাডেমি স্কুল প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠকের প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর পর প্রথম জানাজা হয়। জানাজা শেষে সংসদ উপনেতার কফিন নেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।