বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যামামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বৃহস্পতিবার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছি।”
ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার পর রামপুরা থানায় জিডি করেছিলেন তার বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা, তখন থানা পুলিশই তদন্ত চালিয়ে আসছিল।
নিখোঁজ হওয়ার পর তিন দিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে এই তরুণের লাশ পাওয়া যায়। তার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার ফারদিনের বাবা রামপুরা থানায় হত্যা মামলা করেন।
কাজী নুরউদ্দিন রানার করা মামলায় ফারদিনের বান্ধবী, বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমাতুল্লাহ বুশরাকে আসামি করা হয়েছে।
এরপর বুশরাকে আটকের পর ফারদিন হত্যারহস্য উদ্ঘাটনে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতিও নিয়েছে রামপুরা থানা পুলিশ।
আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা আবেদন করেছিলেন। তবে তদন্তভার ডিবি পাওয়ায় এখন তারাই জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
ফারদিন কীভাবে কোথায় কেন খুন হলেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য এখনও পুলিশ জানতে পারেনি।
মামলায় ফারদিনের নিখোঁজ হওয়া এবং হত্যার ঘটনায় বুশরার ইন্ধনের অভিযোগ করা হয়েছে, তবে উদ্দেশ্য সেখানেও স্পষ্ট করা হয়নি।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন বলেন, ফারদিন নিখোঁজ হওয়ার পরপরই পুলিশ মাঠে নামে। বুশরাকে তখন ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
“মামলা হওয়ার আগেই জিডির ভিত্তিতে আমরা বুশরাকে ডেকেছি, কথা বলেছি। পরে তিনি বাসায় চলে যান। মামলা হওয়ার পর সকালে তাকে গ্রে্প্তার করা হয়।”
এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফারদিনকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল বুশরার সঙ্গে। গত ৪ নভেম্বর রাতে রামপুরা পর্যন্ত তারা রিকশায় এসেছিলেন একসঙ্গে। ফারদিন সেখানে নেমে যান। এরপর মধ্যরাত থেকে ফারদিন নিখোঁজ।
ওই দিন দুপুরে ডেমরার কোনাপাড়ার বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। তিনি মাকে বলে গিয়েছিলেন, রাতে বুয়েটের হলে থাকবেন, পরদিন বাসায় ফিরবেন।
রামপুরায় বুশরা থেকে আলাদা হওয়ার পর ফারদিনের মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান মধ্যরাতে ঢাকার সদরঘাটের কাছে পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধারের সময় তার মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, হাতঘড়ি সবই পাওয়া গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক জানান, তারা ফারদিনের দেহে নির্যাতনের আলামত পেয়েছেন।
বুশরাকে হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই খুনের কিনারা করতে নানা বিষয় জানতে চাওয়া হবে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন।
২৪ বছর বয়সী ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তিনি বিতার্কিক ছিলেন। একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আগামী ডিসেম্বরে তার স্পেনে যাওয়ার কথা ছিল।