প্রবীণ ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে চড় মারাকে ‘তুচ্ছ ঘটনা’ ভেবেছিলেন কৃষক লীগ নেতা


FE Team | Published: December 26, 2022 21:09:50 | Updated: December 27, 2022 16:32:28


মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি বানি আমিন। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

প্রবীণ প্রকৌশলী ম ইনামুল হককে ঢাকার শাহবাগে প্রকাশ্যে চড় মারাকে ‘তুচ্ছ ঘটনাভেবেছিলেন কৃষক লীগ নেতা বানি আমিন। তবে ‘নানামুখী চাপেএখন তার উপলব্ধি হয়েছে, একজন বৃদ্ধের গায়ে হাত তোলা ঠিক হয়নি।

গত ২৪ ডিসেম্বর, আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন জাতীয় জাদুঘরের সামনে সড়কে দাঁড়িয়ে প্রচারপত্র বিলি করছিলেন সর্বজন বিপ্লবী দলের আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইনামুল। তখন এক ব্যক্তি এসে তাকে চড় মারেন।

হেনস্তাকারী বানি আমিন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি। তিনি বেতবাড়িয়া গ্রামের আফতাব আলী ছেলে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

সোমবার দুপুরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বানি আমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনার কয়েকশ গজ দূরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হচ্ছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত রয়েছেন। এমন স্পর্শকাতর স্থানে সরকারবিরোধী লিফলেট বিলি ঘটনা দেখে তিনি ক্ষুব্ধ হন। এ সময় তার সঙ্গে এলাকার আরও ৭/৮জন ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, “লিফলেট বিলিকারী বয়স্ক ব্যক্তিটিকে ওই স্থান থেকে সরে যেতে বলি। কিন্তু তারপরও তিনি নিষেধ না মেনে লিফলেট বিলি করতে থাকলে গায়ে হাত তুলি।

গায়ে হাত তুলে তাকে সরে যেতে বাধ্য না করলে হয়ত তিনি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হতে পারতেন। ঘটনাটি খুবই তুচ্ছ মনে হয়েছে।

বানি আমিন বলেন, “কিন্তু স্যোসাল মিডিয়ায় লাঞ্ছিত করার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী চাপে রয়েছি। এখন মনে হচ্ছে, একজন বৃদ্ধ মানুষের গায়ে এভাবে হাত তোলা, লাঞ্ছিত করা ঠিক হয়নি।

বানি আমিন এ ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন।

ইনামুল হক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট, হাওর ও জলাভূমি অধিদপ্তরসহ কয়েকটি সরকারি সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক। এখন রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে সক্রিয়।

সেদিনের ঘটনা নিয়ে প্রকৌশলী ইনামুল বলেন, প্রতি শনিবার তারা শাহবাগ মোড়ে জমায়েত হয়ে নিজেদের দলের লিফলেট বিলি করেন। তারা প্রতি সপ্তাহে প্রতীকী হরতালও আহ্বান করেন। গত শনিবার সেরকমই লিফলেট বিলি চলছিল। তখনই কয়েকজন এসে তাকে হেনস্তা করেন।

ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, একজন সাংবাদিক যখন ইনামুল হকের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন, তখন এক ব্যক্তি এসে হঠাৎই ওই প্রকৌশলীকে চড় মেরে বসেন।

সোমবার বানি আমিনের গ্রাম বেতবাড়িয়ায় গিয়ে জানা যায়, তার পরিবার বেশ প্রভাবশালী ও অবস্থাসম্পন্ন। চার ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার ছোট বানি আমিন। পৈত্রিক জমিজমা দেখাশুনা করে সংসার চালান তিনি।

গ্রামের লোকজন জানান, ২০০২ সালে সংঘটিত মাহিরুল ও ইউনুস হত্যা মামলার আসামির তালিকায় নাম ছিল বানি আমিনের। পরবর্তী সময়ে তিনি হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পান।

প্রকাশ্যে চড় মারার ঘটনার দুদিন পেরিয়ে গেলেও হেনস্তাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংগঠন ও ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন। 

যদিও পুলিশ বলেছে, তারা এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি।

Share if you like