পাঁচ বছরের বেশি সময় পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে কক্সবাজারে চলছে সাজ সাজ রব।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে কক্সবাজারে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে ইনানী সৈকতে গিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ার উদ্বোধন করেন এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রথমবারের মত কক্সবাজারে এই আন্তর্জাতিক নৌ মহড়ার আয়োজন করেছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারতসহ বিশ্বের ২৮টি দেশ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ-২০২২’ শীর্ষক এ মহড়ায়, যার প্রতিপাদ্য ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’।
এ অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বঙ্গোপসাগরে নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ কজওয়ে জেটিরও উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
নৌ মহড়ার কর্মসূচি শেষে দুপুর ২টার পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ জনসভা মঞ্চ থেকেই তিনি কক্সবাজারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে ১৯৬৩ কোটি টাকার ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং চারটি প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করবেন।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ পুনর্নির্মাণ, সড়ক সংস্কার, সেতুসহ বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প রয়েছে এর মধ্যে।
প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৬ মে এ স্টেডিয়ামেই আওয়ামী লীগের জনসভায় বক্তৃতা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন পর সৈকত শহর কক্সবাজারে তার এ সফর ঘিরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জড়ো হচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। তাদের হাতে দেখা যাচ্ছে নেতাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন, গায়ে রঙিন টি শার্ট, মাথায় নানা রঙের ক্যাপ।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুর ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর আশা করছেন স্থানীয় নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে কক্সবাজার জেলা পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। সাথে রয়েছে কঠোর গোয়েন্দা নজরধারী।
দুটি অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্যসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চার হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনে জেলার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হয়েছে। সভাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে হাসপাতাল মোড়, প্রধান সড়কের পালের দোকানের পশ্চিমে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ রাখা হয়েছে মেরিন ড্রাইভের সাধারণ যান চলাচল।
জটিলতা এড়াতে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে এদিন। একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, বুধবারের পরীক্ষা পিছিয়ে ১৮ ডিসেম্বর নেওয়ার কথা নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছে।