আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগের দিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন, তিনিও ‘নিখুঁত’ নন, নতুন কমিটিতে পদ বদলে গেলেও কাজ করে যেতে আপত্তি নেই।
সম্মেলনের প্রস্তুতি জানাতে শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন কাদের। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন ওবায়দুল কাদের। শনিবার দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে নতুন কমিটি হলে সেখানে তিনি তৃতীয় দফায় একই পদে থাকছেন কিনা, সে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “দায়িত্ব বদলালেও এই দলেই আছি, দলের জন্যই কাজ করব।”
দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কতটুকু সফল হয়েছেন? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উত্তর, “ব্যর্থতা থেকে শিক্ষাও নেব, যেখানে ভুল আছে, আমরা সম্মিলিতভাবে আগামীতে চেষ্টাও করব। কে কোন দায়িত্বে সেটা ব্যাপার না। দায়িত্ব বদলালেও তো আমরা এই দলেই আছি।
“আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল, একাধারে ক্ষমতাসীন দল। ক্ষমতাসীন দলে কিছু সমস্যা থাকে। আজ কেউ আছেন, তিনি আবারও থাকতে চাইবেন। আবার নতুন কারও আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। এখানে দুই আকাঙ্ক্ষার মধ্যে একটা সাংঘর্ষিক বিষয় অনেক সময় হয়ে যায়, সেটাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা প্রতিক্রিয়া থাকে। এই বিষয়টা পৃথিবীর সব দেশেই আছে, আমাদের এখানেও আছে। এসব আছে, ছোট সমস্যা আছে।”
নিজের মূল্যায়নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “কাজ করতে গেলে ভুল-ত্রুটি হবেই। আই অ্যাম নট পার্ফেক্ট লিডার, আমি মনে করি একেবারে পারফেক্ট হওয়া সম্ভব না। ভুল-ত্রুটি তো থাকবেই। সাফল্য আছে, ভুল-ত্রুটিও আছে।
“তবে মহামারীর জন্য আমরা একটা বছর কাজ করতে পারিনি। এর মধ্যে আমার সহকর্মীরা অনেক সহযোগিতা করেছেন, কাজ করেছেন। আমাদের সহযোগী সংগঠন, মহানগর আওয়ামী লীগ কাজ করেছে। আমি মনে করি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারই প্রথম উপজেলা, তৃণমূল পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি সম্মেলন হয়েছে আওয়ামী লীগের। দলের প্রতি তরুণ ও নারীদের আগ্রহ বেড়েছে। আওয়ামী লীগ তার ‘স্বকীয় ধারায়’ এগিয়ে যাচ্ছে।
“নারীরা আজকে, গ্রামেও দেখবেন আমি আমার এলাকায় দশজন মহিলা পাবলিক মিটিংয়ে দেখিনি, এখন শতশত। এটা সারা বাংলাদেশে। তরুণদের এখন স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতি আকর্ষণ, তরুণরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।”
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। সেখানে দলের নতুন কমিটি গঠন হলে দলের ভেতরে বড় ধরনের রদবদল না হওয়ার ইঙ্গিত বৃহস্পতিবার দিয়েছিলেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কাদের।
তিনি বলেছিলেন, “এবারের সম্মেলনে যে কমিটি হবে, সেখানে তেমন একটা পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা পরবর্তী সম্মেলনে…নির্বাচনের পর, আগামও করতে পারি, সে রকমও চিন্তা ভাবনা আছে। তখন একটা বড় ধরনের পরিবর্তন হবে। আপাতত বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছি না।”
কমিটিতে বিতর্কিতদের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা কেউ পারফেক্ট মানুষ না, ভুল-ত্রুটি নিয়েই মানুষ। পারফেক্ট কেউ না, কাজেই পূর্ণতা খুঁজতে গেলে অনেক কিছুই চিন্তা ভাবনা করতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যপারে আমাদের চিন্তা ভাবনা আছে।”
সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক শামসুর নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য পারভীর জামান কল্পনা, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম উপস্থিত ছিলেন।