নূর হোসেনকে স্মরণের দিন


এফই অনলাইন ডেস্ক | Published: November 10, 2022 10:45:24 | Updated: November 10, 2022 16:04:42


নূর হোসেনকে স্মরণের দিন

এরশাদবিরোধী তুমুল আন্দোলনের সময় বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার মুক্তি পাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে রাজপথে নামা যুবলীগকর্মী নূর হোসেনের ৩৫তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালিত হচ্ছে বৃহস্পতিবার। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর রাজধানীর ‘জিরো পয়েন্টে’ পুলিশের গুলিতে তার শহীদ হওয়ার দিনকে প্রতিবছর ‘নূর হোসেন দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়। 

জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন ১৯৮৭ সালের এই দিনে নূর হোসেন বুকে ও পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে রাজপথে বের হয়েছিলেন। 

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল পল্টন এলাকার ‘জিরো পয়েন্ট’ অতিক্রম করার সময় পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছুড়ে মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

নূর হোসেন ছাড়াও সেই আন্দোলনে আরেক যুবলীগ নেতা নূরুল হুদা বাবুল এবং কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো পুলিশের গুলিতে নিহত হন। 

তাদের সেই আত্মত্যাগের পর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হতে থাকলে ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে এরশাদ সরকারের পতন হয়। 

নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে গণপুনরুদ্ধারের সফলতার পেছনে নূর হোসেনের ভূমিকার কথা স্মরণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। 

তিনি বলেন, “সেদিন প্রতিবাদের পুরোভাগে থাকা শহীদ নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। আমি শদীদ নূর হোসেন দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি নূর হোসেনসহ গণতন্ত্রের জন্য আত্মোৎসর্গকারী সকল শহীদকে।” 

রাষ্ট্রপ্রধান আরও বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এ আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনসহ আরো অনেকে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছেন। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সকলে সচেষ্ট থাকবেন- এ আমার প্রত্যাশা।” 

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে স্মরণ করেছেন আন্দোলনের সহযোদ্ধা নূর হোসেনকে; ওইদিন আওয়ামী লীগ সভাপতির গাড়ির পাশ ধরে মিছিলে ‘হাঁটার’ সময়ই তিনি বোমা ও গুলির মুখে পড়েন। 

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সরকার প্রধান তার বাণীতে বলেন, “নূর হোসেন আমার গাড়ির সাথে সাথে হাঁটছিল, মিছিলটি যখন জিরো পয়েন্টে পৌঁছে তখন স্বৈরাচার সরকারের নির্দেশে মিছিল লক্ষ্য করে প্রথমে বোমা মারে এর পরই গুলি করে, সে গুলিতে নূর হোসেন ও বাবুল শহীদ হয়।”  

তাদের আত্মাহুতির ধারাবাহিকতায় মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন-সংগ্রামে আরো নাম না জানা অনেকে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। 

“অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর অবশেষে স্বৈরশাসকের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। জনগণ ফিরে পায় ভোট ও ভাতের অধিকার।” 

মর্মান্তিক সেই ঘটনার স্মরণে এরশাদের পতনের পর থেকে প্রতি বছর ১০ নভেম্বর পালিত হচ্ছে নূর হোসেন দিবস হিসেবে। আর জিরো পয়েন্টের নাম হয়েছে ‘নূর হোসেন চত্বর’। 

দিবসটি উপলক্ষে নূর হোসেন চত্বরে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

Share if you like