বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগ, দেশের অর্থনীতিকে ‘ঝাঝরা’ করে দেওয়ার কারণে সরকার কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এমন অভিযোগ করেন। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
তিনি বলেন, ‘‘আজকে ওরা খুব কঠিন অবস্থায় পড়েছে। ওই যে বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ, তখন বড় বড় কথা বলত- আমাদের সরকারের আমলে রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার আছে। তো সেই রিজার্ভটা এখন গেল কোথায়?
“আমি যখন একথা বলেছি তখন অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত রাগান্বিত হয়েছেন, রাগান্বিত হয়েছে বলেছেন, আমরা কি ওটা চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছি। আমি উত্তরে বলেছি- চিবিয়ে তো খান নাই, গিলে খেয়েছেন।“
ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, “গোটা বাংলাদেশের সমস্ত অর্থনীতিটা আপনারা গিলে খেয়ে ফেলেছেন। সর্বভুক এরা (সরকার)...। আজকে বাংলাদেশকে তারা (সরকার) এখন ঝাঝরা করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের হাত থেকে যদি বাংলাদেশকে সরানো না যায় তাহলে বাংলাদেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।”
পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বৈদেশিক মুদ্রা তহবিল থেকে অর্থ যোগানের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা তো জানি, যেসমস্ত পণ্য আমদানি করা হয় তার পেমেন্ট করা হয় এই রিজার্ভের তহবিল থেকে, আমরা যে ঋণ নেই সেই ঋণগুলোর পরিশোধ রিজার্ভের টাকা থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গতকাল বললেন যে, পায়রা বন্দরে খরচ হয়েছে।
“আমরা জানতে চাই, কীভাবে রিজার্ভ থেকে এই টাকা খরচ হল, কারা করলো, কাদেরকে দিয়ে করালেন, রিজার্ভের টাকার কীভাবে গেল।”
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি’তে এ আলোচনা সভা হয়।
আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “জাতীয় নির্বাচন তো পরে। আগে একে (সরকার) বিদায় করতে চাই। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের পরিষ্কার কথা এই সরকারকে চলে যেতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে, সংসদটাকে বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।“
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষ বসে থাকবে না বলেও মনে করেন তিনি। তার আশা, সবাই আন্দোলনে নামবেন।
তরুণ-যুবক সমাজকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে ‘গণআন্দোলনে’ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক ও ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় নেতা মুরাদ হোসেন, মোকসেদ আলী মঙ্গলীয়া, আবদুল হালিম, শরীফ হোসেন, খালেদা আখতার, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের রায়হান আল মাহমুদ, ইব্রাহিম হোসেন বক্তব্য রাখেন।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান ও জ্যেষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলন।