উত্তর কোরিয়ার ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলের ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে পড়ার পর সিউল পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে জবাব দিয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
এই প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ার আপাত পরীক্ষামূলকভাবে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমার কাছাকাছি গিয়ে পড়ল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমার বাইরে পড়লেও দুই কোরিয়ার মধ্যে জলমীসা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে আর তাই দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সক-ইয়ল এ ঘটনাকে ‘অঞ্চল দখলের কার্যকর প্রচেষ্টা’ অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো দুই কোরিয়ার কার্যকর জলসীমা নর্দান লিমিট লাইনের (এনএলএল) উত্তরে তিনটি এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
উত্তর কোরিয়াকে ‘উস্কানির মূল্য দিতে হবে’ এমন মন্তব্য করে ইয়ুনের দপ্তর ‘দ্রুত ও দৃঢ় প্রতিক্রিয়ার’ প্রত্যয় জানানোর পর দক্ষিণ কোরিয়া ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়ে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া তাদের পূর্ব উপকূলের ওয়ানসান থেকে সাগরে তিনটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে, তার একটি দক্ষিণ কোরিয়ার জলসীমার কাছাকাছি এসে পড়েছে।
পরে জেসিএস জানায়, উত্তর কোরিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল থেকে বিভিন্ন ধরনের ১০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।
এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে অন্তত একটি এনএলএলের ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে, দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর সোকচো থেকে ৫৭ কিলোমিটার এবং ইউলং দ্বীপ থেকে ১৬৭ কিলোমিটার দূরে সাগরে এসে পড়ে, ওই সময় এ এলাকাগুলোতে বিমান হামলার সতর্ক সংকেত বাজানো হয়।
ইউলং কাউন্টির এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “সকাল প্রায় ৮টা ৫৫ মিনিটের দিকে (স্থানীয় সময়) আমরা সাইরেনের শব্দ শুনি আর তখনই আমাদের ভবনে থাকা সবাই বেসমেন্টের আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাই। ক্ষেপণাস্ত্রটি গভীর সাগরে পড়েছে এমনটি শোনার পর প্রায় সোয়া ৯টার দিকে আমরা বের হয়ে আসি।”
এই দ্বীপটির দক্ষিণাংশের এক বাসিন্দা জানান, তারা কোনো সতর্ক সংকেত পাননি।
চলতি বছর উত্তর কোরিয়া রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে এবং ২০১৭ সালের পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা ফের শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে অনুমান সিউল ও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের।
সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া তাদের অন্যতম বৃহত্তম যৌথ যুদ্ধবিমান মহড়া ‘ভিজিল্যান্ট স্ট্রম’ শুরু করেছে; ‘এই সামরিক মহড়া ও উস্কানি আর সহ্য করা নাও হতে পারে’ মঙ্গলবার এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে মহড়া বন্ধ করার দাবি জানায় উত্তর কোরিয়া আর তার কয়েক ঘণ্টা পরই তারা ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করে।