Loading...
The Financial Express

তেল-চিনি: ঘোষণাতেই কম দাম, বাজারে প্রভাব নেই

| Updated: December 24, 2022 16:03:47


তেল-চিনি: ঘোষণাতেই কম দাম, বাজারে প্রভাব নেই

মাসের শেষ সপ্তাহের বাজার করতে এসেছিলেন ইমন হোসাইন খান, দোকান থেকে তিনি এক লিটার সয়াবিন তেল নিলেন, দাম দিতে হল আগের মতই বেশি।

রাজধানীর মিরপুর এক নম্বর বাজারে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী জানালেন, সপ্তাহখানেক আগে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমিয়ে ১৮৭ টাকা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে নিতে হয়েছে আগের দামেই, অর্থাৎ ১৯২ টাকা লিটার দরে।

বিক্রেতারা বলছেন, গায়ে লেখা দামেই তারা বিক্রি করছেন। নতুন দাম বসানো তেলের বোতল বাজারে নেই।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ইমন বলেন, “প্রায়ই অনেক জিনিসের দাম কমার ঘোষণা শুনি। কিন্তু বাজারে এসে এর কোনো প্রভাব পাই না। দিন দিন সবকিছু আমাদের মত মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।“

শুক্রবার রাজধানীর অন্য কয়েকটি বাজারেও বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন এবং পাম তেল বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি লিটার পাম তেল ১২০ থেকে ১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যদিও পাম তেলের দাম পাঁচ টাকা কমিয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছিল।

মিরপুরের এক নম্বরের হযরত শাহ আলী সিটি করপোরেশন মার্কেটের জান্নাত ভ্যারাইটিস স্টোরের মালিক সিরাজ আহমেদ বলেন, “সয়াবিন তেলের দাম কোম্পানিভেদে পাঁচ লিটারের বোতলে ৮৮৫ থেকে ৮৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখনও বাজারে পুরোদমে সরবরাহ আসেনি।”

তেলের মত একই পরিস্থিতি চিনির বাজারেও। চিনির দাম কমিয়ে কেজি প্রতি ১০৭ টাকা নির্ধারণ করার পরও এখন ১১০ থেকে ১১৫ টাকার কমে বাজারে চিনি মিলছে না।

এ বিষয়ে সিরাজের ভাষ্য, “বাজারে আগের চিনি থাকায় অনেকক্ষেত্রে দাম বেশি, আবার অনেক জায়গায় কম। যে কম দামে পাচ্ছে সে কম দামে বিক্রি করতে পারছে।“

বাজারে অপরিবর্তিত আছে আটা-ময়দা ও মসুর ডালের দাম। প্রতি কেজি আটা আগের মতই ৭০-৭৫ টাকায় এবং মসুর ডাল মানভেদে ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে হঠাৎ কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৫০-৫৫ টাকার উঠে যাওয়া পেঁয়াজ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকার আশপাশে। তবে বেড়েছে রসুন ও আদার দাম।

মিরপুরের বর্ষা আলু-পেঁয়াজ ঘরের মালিক আবুল বাশার বলেন, “পেঁয়াজের কোয়ালিটিভেদে দাম অনেক রকম। আমার কাছে দেশি নতুন পেঁয়াজ আছে সেটা তিন কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি করছি। কেজিতে ৩৩ টাকা পড়ছে।”

রসুনের দাম বাড়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দেশি রসুন ১০০ টাকা কেজি, ভারতীয় রসুন ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি আদা ১২০ টাকা, আমদানি করা আদা মানভেদে ১৬০-১৮০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

যদিও এক সপ্তাহ আগে দেশি রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর আমদানি করা আদা ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

চালের দাম অপরিবর্তিতই রয়েছে। বাজারে পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন চাল বাজারে এলেও তার সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা।

গেল সপ্তাহ থেকে সবজির বাজারে স্বস্তির হাওয়া বইছে। শীতের সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম আগের চেয়ে কমেছে।

মিরপুর ও মহাখালী এলাকার বাজারের সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি সিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৬০ টাকা, নতুন আলু কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি মিলছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। দাম কমেছে টমেটোর। দেশি গাজর কেজিতে কমেছে প্রায় ২০ টাকা। আর শালগম কেনা যাচ্ছে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

মিরপুর দক্ষিণ মনিপুর এলাকায় সবজি কিনতে আসা গৃহিণী আসমা আক্তার বলেন, “বাজারে কেবল সবজিরই দাম কম। মাছ-মাংসের দাম অনেক বেশি।”

তবে ‘চাষের মাছের’ দাম কিছুটা কমে আসার কথা বলছেন বিক্রেতারা। চাষের কই, তেলাপিয়া, পাঙাশ আকার অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার আশপাশে। এছাড়া রুই, কাতলা কার্পজাতীয় চাষের মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ও ডিমের দাম এ সপ্তাহেও স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি ডজন ডিম মিলছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। অন্যদিকে সোনালি মুরগির কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে বাজারভেদে গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

Share if you like

Filter By Topic