Loading...
The Financial Express

তিন দশকের ঠিকানা ছাড়তে হচ্ছে বুকওয়ার্মকে

| Updated: October 27, 2022 14:34:29


তিন দশকের ঠিকানা ছাড়তে হচ্ছে বুকওয়ার্মকে

বিচিত্র সব বইয়ের সংগ্রহ আর মননশীল পরিবেশের মিশেলে বুকওয়ার্ম ঢাকার নানা বয়সী পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় এক ঠিকানা; এই ঠিকানা এখন পরিবর্তন হচ্ছে।

ঢাকার তেজগাঁওয়ে পুরান বিমানবন্দরের সঙ্গে সড়কের পাশে প্রায় তিন দশক আগে এই বইয়ের দোকানটির যাত্রা শুরু হয়।

ইংরেজিসহ বিদেশি নানা বইয়ের সম্ভার বইপ্রেমী অনেককে নিয়ে যেত দোকানটিতে। পাশে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান রয়েছে, সেখানে খাবার আর সামনের খোলা জায়গায় আড্ডার সুযোগও মিলত।

জায়গাটি ছেড়ে দিতে বিমান বাহিনীর নির্দেশনা আসার পর এখন নতুন ঠিকানা খুঁজতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বুকওয়ার্ম বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনা রহমান।

বুধবার প্রতিষ্ঠানটির ফেইসবুক পাতায় দীর্ঘদিনের ঠিকানাটি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা আসে, যা বইপ্রেমীদের মাঝে বেশ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

হতাশ পাঠকরা বইকেন্দ্রটির সঙ্গে তাদের স্মৃতি মেলে ধরার পাশাপাশি দ্রুত নতুন ঠিকানায় কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দিয়েছেন।

একে ‘মন খারাপ করা খবর’ মন্তব্য করে সাংবাদিক-কলামনিস্ট সৈয়দ বদরুল আহসান লিখেছেন, “এটি এমন জায়গা যেখান থেকে আমি অনেক বই সংগ্রহ করেছি। এখানে আসা এবং ব্যাগভর্তি বই নিয়ে বাসায় যাওয়া ছিল আনন্দের। খুব বেশি মিস করবো।”

আরেকজন পাঠক রুশমিলা খান লিখেছেন, “ছোটবেলা থেকে কৈশোরের অনেক সুন্দর স্মৃতি রয়েছে বুকওয়ার্মের একেকটি সেলফে। আমি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। আশা করি, তারা দ্রুত ফিরে আসবে।”

১৯৯৪ সালে বুকস্টোরটি চালু করেছিলেন বিমানবাহিনীর সাবেক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাহের কুদ্দুস।

বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনা রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমান বাহিনী এই জায়গাটি ঘিরে নতুন স্থাপনা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। সেপ্টেম্বরে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের জায়গাটি ছেড়ে দিতে নোটিস দেওয়া হয়।”

ধানমণ্ডিতে আরেকটি আউটলেট চালুর কিছুদিন পর ২০১৯ সালে তা বন্ধ করে দিয়েছিল বুকওয়ার্ম বাংলাদেশ।

আমিনা রহমান জানান, বর্তমান ঠিকানার পরিসর আরও বড় করায় তারা ধানমণ্ডির আউটলেটটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন, এখন সেটিও ছাড়তে হচ্ছে।

প্রায় ২০ হাজার বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে বুকওয়ার্মে।

অক্টোবরের শেষে বুকস্টোরটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা থাকলেও ফেইসবুকে জানানোর পর পাঠক ও বিমান বাহিনীর ‘ভালো’ প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন বলে জানান আমিনা। এতে আরও অন্তত দুই মাস বর্তমান ঠিকানায় কার্যক্রম চালানো যাবে বলে আশা করছেন তারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

আমিনা বলেন, “বিমান বাহিনীকে আমি দোষ দেব না, তারা এতদিন জায়গাটি আমাদের দিয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের অনেক ভালো সম্পর্ক। উনাদের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। আমি তাদের বলেছি- শুধু অর্থের পেছনে ছুটলে তো হবে না, জ্ঞান এবং সংস্কৃতিকেও রক্ষা করতে হবে।”

ভালো কোনো জায়গা নিয়ে আবার নতুন করে বইয়ের ব্যবসা চালিয়ে নেওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন আমিনা রহমান।

তিনি বলেন, “ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর পাঠকরা বলছে যে আমাদের অনেক বই পড়েছে। তারা জানতে পেরেছে এবং আমরা অনেক পজিটিভ ফিডব্যাক পাচ্ছি।

“তারা চাচ্ছে আমরা যেন খুব দ্রুত অন্য জায়গায় এটিকে শিফট করি, যাতে পাঠকরা আবার দ্রুত তাদের সার্ভিসটা পেতে পারে। পাঠকরাই আমাদের সব। আমরাও জায়গা খুঁজছি। ভালো কোন প্লেস পেলে আমরা আবার শুরু করব।” 

Share if you like

Filter By Topic