দেশের তিন জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ জন। এর মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া ও শেরপুরে দুজন করে এবং হবিগঞ্জের একজন। শেরপুরে আহত হয়েছেন আরও দুজন।
এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে এক বিদ্যালয়ের বেশকিছু বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম অকেজো হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জেলা প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদে বলা হয়। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
কুষ্টিয়া
মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়ায় মারা যান মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নের আটিগ্রামের জাবেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) এবং ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামের ফজলু মাতবরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৪০)।
মিরপুর থানার ওসি গোলাম মস্তফা বলেন, সকালে আটিগ্রামে মাঠে কাজ করছিলেন কৃষক জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় বজ্রপাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবর রহমান জানান, ভেড়ামারার জিকে সেচ প্রকল্পের খালে সকালে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে আশরাফুল ইসলাম নিহত হয়েছেন।
শেরপুর
শেরপুরের নকলা উপজেলার পৃথকস্থানে বজ্রপাতে দুই জন নিহত এবং দুই জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার উরফা ইউনিয়নের হাসনখিলা গ্রামে ও চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রেহারচর গ্রামে এ দুই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন হাসনখিলার মন্নেস আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম অপি (৩০) ও রেহারচরের প্রয়াত সিদ্দিক সরকারের ছেলে নাজমুল হক (৪৫)।
উরফা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো জানান, রফিকুল ইসলাম তার অপর দুই ভাইকে নিয়ে আমন ধান রোপনের জন্য সকালের দিকে বাড়ির পাশের বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলতে যান। এ সময় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন হঠাৎ বজ্রপাতে আহত হন তিনি। এরপর নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসান জানান, আহত দুই ভাই রইস উদ্দিন (৪৫) ও সায়েদুল ইসলাম (৪০) জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান গেন্দু জানান, ইউনিয়নের রেহারচর গ্রামের সিদ্দিক সরকারের ছেলে নাজমুল হক স্থানীয় ব্রহ্মপুত্রের শাখা মৃগী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে সকাল ৯টার দিকে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। নাজমুল হক চার সন্তানের জনক।
নকলা থানার ওসি মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, এসব ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
হবিগঞ্জ
মঙ্গলবার সকালে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে উপজেলার হাওরে কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা যান কালিয়ারভাঙ্গা গ্রামের জামিরুল মিয়ার ছেলে সাফিকুল মিয়া (৩০)।
নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ জানান, ওই কৃষক বাড়ির পাশের হাওরে কৃষিকাজ করছিলেন। এসময় হঠাৎ করে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে তিনি আহত হন। হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজীপুর
গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে একটি বিদ্যালয়ের ৩০টি বৈদ্যুতিক পাখা, টেলিভিশন, বাতি, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট রাউটার ও সিসি ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শ্রীপুর পৌর শহরে শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিকট শব্দে স্কুলের পাশের একটি জলপাই গাছে বজ্রপাত হয়। এতে গাছটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় শ্রেণিকক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জহিরুল হক মণ্ডল বাচ্চু বলেন, “কিছু ক্ষয়ক্ষতি হলেও ছাত্রী-শিক্ষকদের কোনো ক্ষতি হয়নি তাতেই আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
সোমবারও দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রসহ তিনজন নিহত ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন।