ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের চাপ কমাতে রাজধানীতে পাসপোর্ট অফিসের আরও দুটি শাখা চালু করা হচ্ছে; এর একটি মোহাম্মদপুরে এবং অন্যটি হবে বনশ্রীতে।
মোহাম্মদপুরের বছিলার অফিসটি ‘পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পশ্চিম’ এবং বনশ্রীর অফিসটি ‘পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পূর্ব’ হিসেবে পরিচিতি পাবে।
সোমবার পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বছিলায় ঢাকা পশ্চিম শাখা চালু প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহে শাখাটি উদ্বোধন হতে পারে। ভবনটির কাজ প্রায় চূড়ান্ত এবং নথিসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ইতোমধ্যে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং হচ্ছে।
এ শাখায় ঢাকা জেলার সাভার, ধামরাই এবং ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস সালাম, শাহআলী, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকার লোকজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে বনশ্রীতে ঢাকা পূর্ব অফিসটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, সময়মত ভাড়া বাসা না পাওয়ায় মোহাম্মদপুরের সঙ্গে বনশ্রীতে ঢাকা পূর্ব অফিসটি একসঙ্গে উদ্বোধন করা যাচ্ছে না। এখন বাসা ঠিক হলেও এটা উদ্বোধন হতে কিছুটা দেরি হবে।
ঢাকা পূর্ব অফিসটি মহানগরীর ডেমরা, যাত্রবাড়ী, মুগদা, সবুজবাগ, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, রমনা, মতিঝিল, পল্টন, বাড্ডা, ভাটারা, তেজগাঁও, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও হাতিরঝিল থানা এলাকার বাসিন্দার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে।
বর্তমানে আগারগাঁও, কেরানীগঞ্জ ও উত্তরায় ঢাকার আঞ্চলিকি পাসপোর্ট অফিস রয়েছে।
নতুন চালু হতে যাওয়া ঢাকা পশ্চিমের অধীনে নতুন যেসব এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো এতদিন আগারগাঁও ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের আওতাভুক্ত ছিল।
নতুন অফিসটি চালু হওয়ার পর শেরে বাংলা নগর, মিরপুর, কাফরুল, রূপনগর, গুলশান, বনানী, শাহবাগ, ধানমণ্ডি ও কলাবাগান থানা এলাকার জনগণকে সেবা দেবে আগারগাঁও ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস।
ঢাকা পূর্ব অফিস যেসব এলাকা নিয়ে গঠন করা হচ্ছে সেগুলো আগে কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আওতায় ছিল। এটির আওতায় থাকবে ঢাকা মহানগীর শ্যামপুর, কদমতলী, কোতয়ালী, গেণ্ডারিয়া, সূত্রাপুর, লালবাগ, চকবাজার, কামরাঙ্গীচর, বংশাল, ওয়ারী এবং ঢাকা জেলার দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ, কেরানীগঞ্জ মডেল এলাকার বাসিন্দারা।
উত্তরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আওতায় থাকবে ঢাকা মহানগরীর উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, তুরাগ, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, পল্লবী, ভাষানটেক এবং ঢাকা জেলায় আশুলিয়া থানা এলাকা নিয়ে।
ঢাকা সেনানিবাস পাসপোর্ট অফিস শুধু ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় বসবাসরত নাগরিকরা সেবা পান।
থানা এলাকা ছাড়া ঢাকায় সচিবালয়ের ভেতরে আরেকটি পাসপার্ট অফিস রয়েছে যা ‘পাসপোর্ট অফিস, সচিবালয়’ নামে পরিচিত। সেখানে সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সেবা পেয়ে থাকেন।
আপাতত বিতরণ শাখা সরছে না
এদিকে আগারগাঁওয়ে শেরে বাংলা থানা ভবনের সামনে পাসপোর্ট অফিসের প্রধান কার্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা রয়েছে। উন্মুক্ত এ জায়গায় অস্থায়ী ভবন নির্মাণ করে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের বিতরণ শাখা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সামনে শেরে বাংলা নগর থানার বিভিন্ন ধরনের জব্দ করা গাড়িসহ বিভিন্ন আলামত থাকায় তা বিলম্বিত হচ্ছিল।
ওইসব আলামত সরিয়ে নেওয়ার জন্য পাসপোর্ট অফিস থেকে থানাকে একাধিকবার চিঠিও দেওয়া হয়। থানা কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে এসব আলামত সরিয়ে নিলে পাসপোর্ট অফিস সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করে।
পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম জানান, “ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের বিতরণ শাখা সেখানে নেওয়ার কথা থাকলেও আপাতত নেওয়া হচ্ছে না। নতুন করে মোহাম্মদপুর এবং বনশ্রীতে দুইটি অফিস হওয়ায় ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে বিতরণের চাপ কী পরিমাণ থাকে সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”