জোট সরকারের নির্যাতন অনেকে ভুলে গেছে: শেখ হাসিনা


FE Team | Published: October 30, 2022 20:46:47 | Updated: October 31, 2022 12:44:16


জোট সরকারের নির্যাতন অনেকে ভুলে গেছে: শেখ হাসিনা

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের নির্যাতনের কথা জাতীয় পার্টিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রোববার জাতীয় সংসদে সংসদ উপনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য শেখ এ্যানী রহমানের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় এনিয়ে কথা বলেন তিনি। à¦–বর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। 

শেখ হাসিনা বলেন, “জিয়াউর রহমানের অত্যাচার-নিযর্যাতনের শিকার আমাদের প্রতিটি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী। শুধু আমরা কেন আজকে এখানে আমাদের বিরোধী দলের যারা আছেন,বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জেনারেল এরশাদ তারা এবং আনোয়ার হোসেন মঞ্জু থেকে শুরু করে যারাই আছেন, তারাও কিন্তু কম নির্যাতনের শিকার হননি।”

জিয়াউর রহমানের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও মতিয়া চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের করে নির্যাতনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া ঠিক একই কাজ করেছিল।

“রওশন এরশাদ মাস্টার্স ডিগ্রি পাস এবং জেল কোডে রয়েছে মাস্টার্স ডিগ্রি পাস হলে তাকে ডিভিশন দিতে হবে। খালেদা জিয়া কিন্তু তাকে ডিভিশন দেয়নি।এরশাদকেও না। সাধারণ কয়েদিদের সাথে তাকে ফেলে রেখেছিল।

বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে এক সময়ের বিমানবাহিনী প্রধান জামাল উদ্দিনকে একটা ঘড়ি চুরির মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে কারাগারে ডিভিশন না দেওয়ার কথাও কবেলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “এইভাবে মানুষকে তারা অত্যাচার করেছে, এইভাবে নির্যাতন করেছে। জাতীয় পার্টি মনে হয় সেই নির্যাতনের কথা ভুলে গেছে এখন। ভুলে গেছে অনেকেই সেটা।”

বিপরীতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ বলে তাকে মানবিক কারণে বাসায় থাকতে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।

“এক্সিকিউটিভ অর্ডারে তার সাজা প্রাপ্তি স্থগিত রেখে আমরা তাকে তার বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছি। একটা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা করা যায়। কিন্তু খালেদা জিয়া সেটা করেনি।”

আওয়ামী লীগের জন্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর ত্যাগ স্বীকারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “যেমন জিয়াউর রহমান, তারপরে খালেদা জিয়া, জেনারেল এরশাদ দফায় দফায় গ্রেপ্তার, কিন্তু আওয়ামী লীগ যেহেতু জনগনের সংগঠন আর সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মতো অসংখ্য নিবেদিত নেতা-কর্মীরা এই সংগঠনের হাল ধরে থেকেছে বলেই চরম দুঃসময়েও এই সংগঠন কখনও দিক হারায়নি। নীতি-আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গেছে।”

শেখ এ্যানী রহমান বঙ্গবন্ধুর চাচাত ভাই শেখ হাফিজুর রহমানের স্ত্রী এবং সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর চাচি। তার বাবা এনায়েত হোসেন খান পাকিস্তান আমলে জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি সংসদ সদস্য হন। তিনি বাকশাল ব্যবস্থায় জেলা গভর্নরের দয়িত্বও পালন করেন।

শেখ এ্যানী রহমান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “এ্যানী কিন্তু ছোটবেলা থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এমনকি যখন ইডেন কলেজে পড়ে, তখনই সে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। এটা হয়ত অনেকে জানে না, এ্যানী খুব ভালো গানও গাইতে পারত।

“ওর মনটা খুব উদার ছিল। দুই হাতে সে যেকোন মানুষকে সাহায্য করতো। গরিব-দুঃখী যে যখনই তার কাছে আসবে, কেউ খালি হাতে যেত না।”

দীর্ঘদিন রোগে ভুগে এ্যানী রহমানের মারা যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি নিজের হাতে ওকে বিয়ে করিয়ে আনলাম। আর আজকে আমার চোখের সামনে চলে গেল।”

শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকেও স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, “রানি এলিজাবেথের ভেতরে যে মানবিক গুণাবলী ছিল, গ্রেট ব্রিটেনের মানুষের জন্য তিনি একটা মাতৃত্বের প্রতীক ছিলেন। মায়ের মমতা দিয়েই কিন্তু তিনি এই গ্রেট ব্রিটেনের মানুষগুলোকে দেখতেন এবং তাদের যত্ন নিতেন। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও তার আলদা একটা আন্তরিকতা ছিল।”

১৯৯৬ সালের পর থেকে যতবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন এবং যতগুলো কমনওয়েলথ সম্মেলনে গেছেন, ততবার রানি এলিজাবেথের সঙ্গে সরাসরি আলাপের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমি জানি না কেন যেখানেই থাকতেন, সব সময় আমাকে খোঁজ করতেন।”

রানির দেওয়া একটি ভোজসভা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “পরিচয় হওয়ার সাথে সাথে বলছেন- ওহ তোমরা দুইজন (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী) তো সেকেন্ড জেনারেশন। এরপর সিঙ্গাপুরের যিনি প্রাইম মিনিস্টার, তাকেও বললেন তোমরা তিনজনই সেকেন্ড জেনারেশন।”

Share if you like